রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ২৯শে ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া *** ২০শে জানুয়ারির মধ্যে সব পাঠ্যবই সরবরাহের নির্দেশ *** মুম্বাইয়ে অরিজিতের কনসার্টের টিকিটের মূল্য লাখ টাকা *** তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে রাহাত ফতেহ আলী খানের সৌজন্য সাক্ষাৎ *** সাধারণ মানুষ সংস্কার বোঝে না, তারা বোঝে যেন ভোট ঠিকভাবে দিতে পারে : ফখরুল *** বাংলাদেশকে আরও ৪০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক *** নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চলবে : পরিবেশ উপদেষ্টা *** ‘মহাকালের পাতায় হাসান আরিফের কৃত্তি লেখা থাকবে’ *** দুদক চেয়ারম্যান নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন *** ওয়েজ বোর্ড সিস্টেম বাতিল করে সাংবাদিকদের নূন্যতম বেতন চালু করা উচিত : শফিকুল আলম

‘হাইড্রো ইকোপার্ক’ হবে কল্যাণপুরে, কমবে জলাবদ্ধতা বাড়বে সৌন্দর্য

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৪৬ অপরাহ্ন, ৩রা জুলাই ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে রাজধানীর কল্যাণপুরে নির্মিত হচ্ছে হাইড্রো ইকোপার্ক বা জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক। এতে পাল্টে যাবে এই এলাকার চিত্র। নতুন সৌন্দর্যে চিত্রায়িত হবে কল্যাণপুর এলাকা। রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করতেও ভূমিকা রাখবে এই হাইড্রো ইকোপার্ক।

গাবতলীর গৈদারটেকের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত কল্যাণপুরের রিটেনশন পন্ড বা জলাধার। মূলত মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর ১, ধানমন্ডি এলাকার বৃষ্টির পানি জমা হয় এই জলাধারে। পরে সেই পানি পাম্পের মাধ্যমে অপসারণ করা হয় নদীতে। এই জলাধারকে কেন্দ্র করেই হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে ডিএনসিসি।

কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড

রিটেনশন পন্ডের ৫৩ একর জায়গা ঘিরে গড়ে তোলা হবে হাইড্রো ইকোপার্ক। এখানে থাকবে হাঁটার রাস্তা, সাইকেল লেন, শিশুদের খেলার জায়গা, কৃষি উদ্যান, প্রজাপতি ও পাখির অভয়ারণ্য, জীববৈচিত্র্যময় দ্বীপসহ নানা আয়োজন। এ প্রকল্পে থাকবে মোট ১০টি অঞ্চল। যার মধ্যে পাঁচটিতে থাকবে প্রকৃতির ছোঁয়া লাগানো পরিবেশ, প্রজাপতির জন্য উন্মুক্ত স্থান, পাখির আশ্রয়স্থল, জলজ পার্ক। আর এসবের মধ্যে থাকবে জলপথ। পর্যটকরা নৌযানে করে ঘুরতে পারবেন এসব এলাকায়।

হাইড্রো ইকোপার্কটি করা হবে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের জন্য। ১৪টি পয়েন্ট দিয়ে সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন মানুষ। পানির ওপর এবং পাশে দিয়ে থাকবে হাঁটার পথ ও সাইকেল লেন। পাশেই থাকবে কৃষিজমি, কোল্ড স্টোরেজ, সৌর জল শোধনাগার।

এই এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন, এখানে পার্ক হলে আমাদের জন্যই ভালো। আমরা সুন্দর জায়গায় থাকতে পারবো। ময়লা-আবর্জনা আর পানির দুর্গন্ধ পেতে হবে না। আমরাও চাই পরিবেশটা ভালো হোক।

১৯৮৯ সালে এই রিটেনশন পন্ডের জায়গা অধিগ্রহণ করে ঢাকা ওয়াসা। তবে অধিগ্রহণের পরও ওই জায়গা নানাভাবে দখল করে রাখে স্থানীয় প্রভাবশালীসহ অধিগ্রহণের সময় টাকা পাওয়া জমির মালিকরা। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসা থেকে এই পন্ড বুঝে পায় ডিএনসিসি। এরপর সেখানে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার কার্যক্রম চালায় তারা। উদ্ধার করা জায়গায় পন্ডের গভীরতা বাড়াতে খননকাজও শুরু করা হয়। উদ্যোগ নেওয়ার দুই বছরের মধ্যে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ চলছে কিছুটা ধীরগতিতে।

এলাকাটি ঘুরে দেখা যায়, যেসব জায়গা ইকোপার্ক নির্মাণের জন্য ডিএনসিসি উদ্ধার করেছিল, সেখানে কেউ কেউ আবার ঘর তৈরি করেছে। সীমানা পিলারের তোয়াক্কা না করেই নির্মিত হয়েছে এসব বাড়ি। পার্কের জায়গার একাংশে নতুন করে ট্রাকস্ট্যান্ড গড়ে ওঠার চিত্রও দেখা যায়। তবে নতুন একটি খাল খনন করা হয়েছে, যা সহজেই চোখে পড়ে।

রিটেনশন পন্ড এলাকার পাশে খাবারের দোকান আছে মো. লিটনের। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কবে কাজ শেষ হবে কিছুই জানি না। শুধু দেখেছি উচ্ছেদ করতে। কিছু দিন কাজ হয়েছে। তারা একটা খালের মতো খনন করেছে। সেটার মাটি দিয়ে আবার নিচু জায়গা ভরাট করেছে। যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে তারা অনেকে আবার বাড়ি করেছে খালের জায়গায়। কাজটা দ্রুত শেষ হলেই ভালো। আমরা সুন্দর একটা জায়গা পাবো। তাহলে আমাদের ব্যবসাও ভালো হবে।

মো. মমিনুল ইসলাম ডিএনসিসির ইকোপার্কের কাজের সঙ্গে জড়িত এক কর্মী। তিনি বলেন, আপাতত কাজ বন্ধ আছে, তবে আবার শুরু করবে। বিল আটকে আছে বলে কাজ বন্ধ। যারা ঘর তুলেছে আবার এগুলো সব ভাঙবে।

আলী হোসেন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, পার্কের জায়গায় যেসব স্থাপনা আছে সব ভাঙবে। এগুলো পার্কের রাস্তার মধ্যে পড়েছে। অনেক বাড়িওয়ালাই নিয়ম মানে নাই। ভেঙে দেওয়ার পর আবারও তারা ঘর করেছে।

আরো পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণের বার উদ্ধার

ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, কল্যাণপুর ইকো পার্ক প্রকল্পটি মেয়রের অগ্রাধিকার প্রাপ্ত। ইতোমধ্যে পার্কের নকশার কাজ শেষ। তবে পার্কটি সম্পূর্ণ করতে আরো কিছু জমির প্রয়োজন রয়েছে। ফলে রিটেনশন পন্ডের পাশে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)  ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জমি নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে দুই সংস্থার সঙ্গে।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বলেন, রিটেনশন পন্ডটি উদ্ধার করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু আমাদের মেয়রের প্রচেষ্টায় পন্ডে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে। উচ্ছেদের পরপরই কাজ শুরু হয়েছে। কাজটি চলমান। কিছু ইস্যু আছে। সেগুলোর সমাধান হলে কাজে গতি আসবে।

এর আগে পন্ডের জায়গা উদ্ধারকালে ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, যত বাধাই আসুক, কল্যাণপুরে ইকোপার্ক নির্মাণ হবেই। ইকোপার্ক যত বেশি বড় হবে, রাজধানীবাসী তত বেশি সুফল ভোগ করতে পারবেন।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, ইকো পার্কটির আনুষ্ঠানিক কাজ এখনও আমরা শুরু করতে পারিনি। এখনও সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। তবে দখল হয়ে যাওয়া পন্ডটি গভীর করে খননের কাজ চলছে যাতে আশপাশের এলাকার যে খালগুলো রয়েছে তার পানি এসে এখানে জমা হয়। এটির কারণে মিরপুর মোহাম্মদপুর ও কল্যাণপুরের অনেক এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হবে। 

তিনি বলেন, ইকো পার্কটি জাপানি একটি পার্কের কনসেপ্ট থেকে নেওয়া। এর জন্য বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগের সঙ্গে কথা হচ্ছে৷ এছাড়া এই প্রকল্পের আশপাশে সরকারি কোনও ভবন হচ্ছে কি না তাও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে৷ সব কিছু যাচাই শেষে অনুকূলে আসলে কাজ শুরু করবো। এটি শুধু ইকো পার্কই হবে না, জলাবদ্ধতা নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে।

এসি/

‘হাইড্রো ইকোপার্ক’ কল্যাণপুর

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন