সোমবার, ৩১শে মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-টিকেট পদ্ধতি ঈদযাত্রায় স্বস্তি দেবে

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, ২২শে মার্চ ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

কয়েক বছর আগেও ঈদযাত্রায় টিকিট নিয়ে জন-ভোগান্তির শেষ ছিল না। খুশির ঈদযাত্রায় ট্রেন, বাস, বা লঞ্চে বাড়ি ফেরার জন্য দীর্ঘ সময় সারিতে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে হত।কখনো কখনো কয়েক ঘন্টা থেকে দিন পেরিয়ে গেলেও টিকিট মিলতো না। তবে গত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে টিকিট চালু হওয়ার কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির বদলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। 

আকাশপথে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রেও ভোগান্তি ছিল। তবে সেই ভোগান্তি লাঘব করেছে ই-টিকিট পদ্ধতি। যতই সময় গড়াচ্ছে, দেশে ততই অনলাইন সেবার পরিধি বাড়ছে। ঘরে বসেই মানুষ বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় মানুষ ঘরে বসে অনলাইনে টিকিটও কিনছেন। এতে অনেকটাই ভোগান্তি লাঘব হয়েছে।

আগে টিকিটের জন্য যাত্রীদের রেল-স্টেশন ও বাস কাউন্টারে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হত। অনলাইন টিকেটিং ব্যবস্থা যাত্রীদের ভোগান্তির  লাগাম টেনে ধরতে শুরু করে। বাসায়, অফিসে বা অন্য যে কোনো জায়গায় বসে এ টিকিট সংগ্রহ করা সহজ থেকে সহজতর হয়েছে।

তবে এখনো অনলাইনে কীভাবে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়-সেই বিষয়ে অনেকে স্পষ্ট ধারণা রাখেন না। অনেকের কাছে ই-টিকেটিং নিয়ে এক ধরনের ভয়-বিভ্রান্তি কাজ করে।

পবিত্র রমজান মাস শেষের দিকে চলে এসেছে। ঈদযাত্রার মূলস্রোত সড়ক, রেল ও নৌপথে শুরু হবে। আকাশযানেও বাড়বে ভিড়। ঢাকার কমলাপুর রেল-স্টেশনে টিকিট সংগ্রহের জন্য রাত জেগে যুদ্ধ করতে হবে না, যাত্রীদের কাছে রাত জেগে টিকিট কেনার বিষয়টি এখন গল্পের মতো। এবার বাড়ি যাওয়ার আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাস-ট্রেন-লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

আকাশযানের টিকিটও বিক্রি হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য গত ১৪ই মার্চ থেকে অনলাইনে ট্রেনের আগাম  টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ২৭শে মার্চ ভ্রমণের জন্য অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে গত ১৭ই মার্চ সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১ কোটি ৫০ লাখ হিট বা টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে।

২০শে মার্চে ৩০শে মার্চের টিকিট বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির জন্য অনলাইনে যুদ্ধ। রেলে শতভাগ টিকিট এবারও অনলাইনে  বিক্রি করা হয়। যার কারণে রেল-স্টেশনের কাউন্টারে আগের ভিড় বা ভোগান্তি থাকবে না।

অথচ আজকের অবস্থায় আসার পথ সহজ ছিল না। ২০১২ সালের মে মাস থেকে সরকারিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার ব্যবস্থা চালু হয়। এক যুগের বেশি সময়ের ব্যবধানের পর রেলওয়ের ডিজিটাল টিকিট পদ্ধতির পথ চলা সহজ ও স্বাভাবিক হয়েছে। এখন শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়। রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিন আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কেনা যায়। এজন্য প্রথমেই দরকার হয় সাইটটিতে নিবন্ধন করা।

এ পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল ফোন নম্বর দিতে হয়। এরপর স্টেশন, ভ্রমণের তারিখ ও ট্রেনের শ্রেণি নির্বাচন করতে হয়। এখানে বিদ্যমান আসনের ভিত্তিতে প্রদর্শিত আসনের তালিকা থেকে এক বা একাধিক আসন বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। দাম পরিশোধের (পেমেন্টের) জন্য ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড বা বিকাশ ও নগদের মতো  মোবাইল ফোনে পেমেন্ট পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা যায়। 

টিকিটের দাম পরিশোধ শেষে প্রাপ্ত ই-টিকিটের প্রিন্ট নিয়ে রেল স্টেশনে যেতে হয়। ওয়েবসাইট ছাড়াও ট্রেনের টিকিট কেনার জন্য রেলওয়ের নিজস্ব অ্যাপ ‘রেল সেবা’ থেকে মোবাইল অ্যাপস থেকেও টিকিট কেনা যায়।

সড়ক পরিবহনেও অধিকাংশ বাস কোম্পানিগুলো অনলাইনে টিকিট বিক্রি করে থাকে। যার কারণে বাসায় বসেই অধিকাংশ যাত্রী আগেই টিকিট কিনে নেন। ফলে ঈদের সময় গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালীর মতো বাসস্ট্যান্ডের টিকিট কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের ভিড় আগের মতো হবে না। লঞ্চ যাত্রীদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা প্রযোজ্য।

এইচ.এস/



ঈদযাত্রা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন