ছবি : সংগৃহীত
নীরব ঘাতকের মতো বেড়ে চলে হাইপারটেনশন। চলতি ভাষায় আমরা যাকে বলি ‘হাই ব্লাড প্রেসার’। এই প্রেসার প্রাণঘাতীও বটে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে রোজ ওষুধ খেতে হবে। আর একদিন প্রেসারের ওষুধ বাদ দিলেই আপনি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো সমস্যা দেখা দেয়। কেন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হানা দেয় এবং কীভাবে এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, তারই খুঁটিনাটি রইল এখানে।
ভারতের বিএম বিড়লা হার্ট হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সব্যসাচী পাল হাইপারটেনশনের পেছনে কয়েকটি লাইফস্টাইল ফ্যাক্টরকে দায়ী করেছেন। এর মধ্যে ব্যায়াম থেকে শুরু করে ওবেসিটি, ধূমপানের মতো বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ডা. সব্যসাচী পালের কথায়, নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু প্রতিদিন অ্যারোবিক ব্যায়াম করে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষত যাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
অন্যদিকে, শরীরের ওজন বেড়ে গেলে, ওবেসিটিতে ভুগলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আবার অনেক সময় ওবেসিটির জেরে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মুখোমুখি হতে হয়। এখান থেকেও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন : যেসব লক্ষণে বুঝবেন ডেঙ্গু হয়েছে
ডা. সব্যসাচী পাল হাইপারটেনশনের বিরুদ্ধে দায়ী করেছেন প্রিজারভেটিভ, চিনি ও নুন দেওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবারকে। এতে উচ্চ পরিমাণে ক্যালোরি, সোডিয়াম থাকে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি কিডনির সমস্যা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে ফাস্ট ফুড ছেড়ে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া করা জরুরি। হাইপারটেনশনের ঝুঁকি এড়াতে ডা. পাল ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এই লাইফস্টাইল ফ্যাক্টরগুলো ছাড়াও আরেকটি বিষয়কে হাইপারটেনশনের জন্য দায়ী করেছেন চিকিৎসক। স্ট্রেস বা মানসিক চাপও উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী। মানসিক চাপ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
হাইপারটেশনের রোগী হলে প্রতিদিন ওষুধ খেতে হবে এবং চিকিৎসাধীন থাকতে হবে। হাইপারটেনশন নিয়ে এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন বিএম বিড়লা হার্ট হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. অঞ্জন সিয়োটিয়া। ডা. অঞ্জন জানিয়েছেন, হাইপারটেশনের আক্রান্ত হলেই অনেকেই চিকিৎসা করান না। এমনকি চিকিৎসাধীনও থাকেন না। অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেনই না যে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। যেহেতু তারা কখনওই নিয়মিত ব্লাড প্রেসার মাপেন না। আর যারা এই স্বাস্থ্য অবস্থা সম্পর্কে সচেতন এবং হাইপারটেনশনের রোগী তাদের মধ্যে অর্ধেক রোগী রোজ ওষুধ খান না। আর এর জেরেই ধীরে ধীরে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলেন।
চিকিৎসাধীন না থাকলে, নিয়মিত ব্লাড প্রেসার চেক না করালে এবং ওষুধ না খেলে জটিলতা বাড়বে। এখান থেকে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই ডা. অঞ্জন ঘন ঘন রক্তচাপ পরীক্ষা করানো এবং সেই মতো ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা আরও সহজ হবে।
তথ্যসূত্র : টিভি৯
এস/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন