ছবি: সংগৃহীত
ঘাস চাষ করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কৈট্টা গ্রামের রুবেল হোসেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এই ছাত্র বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আয় করছেন ঘাস চাষ করে। ঘাস চাষে এ সফলতা তাকে শুধু অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করেনি, তার দেখাদেখি অনুপ্রাণিত হচ্ছেন এলাকার অনেকে।
পাঁচ বছর আগে নিজের গরুর খামারের জন্য এক বিঘা জমিতে ঘাস চাষ শুরু করেছিলেন রুবেল। ধীরে ধীরে তিনি বাণিজ্যিকভাবে ঘাস চাষে মনোযোগ দেন। বর্তমানে ২০ বিঘা জমিতে স্মার্ট নেপিয়ার, গুয়াতেমালা, জাঞ্জিবার, পাকচং এবং তাইওয়ান হাইব্রিড জাতের ঘাস চাষ করছেন।
রুবেল গণমাধ্যমকে বলেন, জমিভাড়া, সার, বীজ, সেচ, কৃষি শ্রমিকসহ সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি ঘাস চাষে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা। প্রতিবিঘায় ঘাসের আবাদ হয় ১০ মেট্রিক টন। বছরে প্রতি বিঘায় ছয় বার ঘাস কাটা যায়। সেই হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৬০ মেট্রিক টন ঘাস উৎপাদন হয়। প্রতি মেট্রিক টন ঘাস পাঁচ হাজার টাকা দরে বছরে বিঘাপ্রতি তিন লাখ টাকার ঘাস বিক্রি করা হয়। সে হিসেবে ২০ বিঘা জমিতে খরচ বাদ দিয়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আয় করেন কলেজছাত্র রুবেল।
ভবিষ্যতে আরও বেশি জমিতে ঘাস চাষের পরিকল্পনা করছেন তিনি। পাশাপাশি বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে চান।
নয়াডিঙ্গি গ্রামের কৃষক আনসার আলী জানান, তিনি রুবেলের কাছ থেকে ঘাস চাষ পদ্ধতি শিখে নিজেও এক বিঘা জমিতে ঘাসের আবাদ করেছেন। তার আশা, এই উদ্যোগে তিনি লাভবান হবেন।
রুবেলের মতো ঘাস চাষ শুরু করার কথা ভাবছেন একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রুবেলের সাফল্য দেখে আমি ভীষণ উৎসাহ পেয়েছি। আমার নিজস্ব দেড় বিঘা জমি আছে। ভাবছি, সেগুলোতে নেপিয়ার ও গুয়াতেমালা জাতের ঘাস চাষ করবো। রুবেলের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি।’
কৃষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমি অনেকদিন ধরে ধান চাষ করছি। কিন্তু ঘাস চাষে যে এত লাভ তা আগে বুঝিনি। রুবেল আমাকে ঘাস চাষের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। এরইমধ্যে এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ঘাস চাষ শুরু করেছি।’
আরও পড়ুন: আক্কেলপুরে সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে সুমিষ্ট কমলা
কলেজছাত্র আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রুবেল ভাইয়ের সফলতা দেখে আমি ও আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে যৌথভাবে ঘাস চাষের পরিকল্পনা করছি। খুব শিগগির এটা শুরু করবো।’
এসি/ আইকেজে