ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে শখের বশে মিশ্র প্রকৃতির খামার গড়ে তোলেন মুক্তদেরুল ইসলাম মুক্তা। খামারে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস-মুরগি এবং পাখি লালন-পালন শুরু করেন। এক পর্যায়ে এসব প্রাণী ডিম দিতে শুরু করে। সেই ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মুক্তা।
মিশ্র প্রকৃতির খামার মালিক মুক্তদেরুল ইসলাম মুক্তা দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতইল ইউনিয়নের শেখরপুর ধদৈর গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, ২০১১ সালে ঢাকায় লেখাপড়ার সময় শখের বশে পাখি পোষা শুরু করেন। সেই থেকে ঢাকাতেই গড়ে তোলেন ছোট একটি পাখির খামার। লেখাপড়া ও চাকরির পাশাপাশি পাখি পোষা, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো এবং তা বাজারে বিক্রি করছেন। এটি এখন লাভজনক ব্যবসা। তিনি খামারটি বাণিজ্যিকভাবেই চালাচ্ছেন।
২০২০ সালে করোনার কারণে ব্যবসায় মন্দাভাব ও ঢাকা থেকে রংপুরের কর্মস্থলে যোগদান করায় পুরো পাখির খামারটি নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে মুক্তা। ২০২১ সাল থেকে বোচাগঞ্জ উপজেলার শেখরপুর ধদৈর গ্রামের নিজ বাড়ির দু’টি কক্ষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সৌখিন হাঁস-মুরগি এবং পাখি লালন-পালন করে আসছেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষ মিশ্র প্রকৃতির এই খামারে এসে পরিদর্শনের পাশাপাশি সৌখিন হাঁস-মুরগি এবং পাখি কিনছেন।
এই খামারের প্রতিবেশী মিজান আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ছোট থেকে পাখির খামার দেওয়ার ইচ্ছা। তাই আমি আজ মুক্তা ভাইয়ের খামার দেখতে এসেছি। ভাইয়ের কাছে পরামর্শ নিয়ে আমিও খামার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।
মুক্তদেরুল ইসলাম মুক্তার মিশ্র প্রকৃতির খামার দেখতে আসা মোস্তফা কামাল বলেন, মুক্তা ভাইয়ের খামারে কিছু মুরগি বোচাগঞ্জ উপজেলায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলায় দেখেছি। ভাইয়ের এমন উদ্যোগ দেখে আমারও পাখির খামার করার ইচ্ছা হয়েছে। তাই আমি আজ নিজে ভাইয়ের খামার দেখতে এসেছি। ভাইয়ের মিশ্র প্রকৃতির খামারটি দেখে অনেক ভালো লাগল।
আরো পড়ুন: গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন কুড়িগ্রামের নারীরা
তরুণ উদ্যোক্তা মুক্তদেরুল ইসলাম মুক্তা বলেন, আমার খামারে ফাইটার, তিতির, কচিং বেনথাম, পুলিশ ক্যাপ, মিশরীয় ফাউমি, সাইবেরিয়া গলাছিলা, পিউর টাইগার প্রজাতির মুরগি আছে। কিছু সংখ্যক হাঁসও পালন করি। মূলত মিশরীয় ফাউমি বাণিজ্যিকভাবে পালন করছি ডিমের জন্য। যেহেতু নতুন তাই খামার আস্তে আস্তে বড় করার চিন্তা আছে। মিশরীয় ফাউমির ডিমের উৎপাদন হার অনেক বেশি। বছরে একটি মুরগি তিনশ ডিম দিয়ে থাকে। আর অন্যান্য সৌখিন মুরগি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি।
মুক্তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ছোটোবেলা থেকেই তার ছেলের পশু-পাখির প্রতি দুর্বলতা ছিল। ঢাকায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংগ্রহ করে পরিচর্যা করে এবং অল্প অল্প করে নিজেই ছোট একটি খামার গড়ে তোলে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সৌখিন হাঁস-মুরগি এবং পাখি সংরক্ষণ করছে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু কায়েস বিন আজিজ বলেন, গবাদি প্রাণীর খামারের পাশাপাশি বোচাগঞ্জে অনেকেই পোষা পাখি বা প্রাণী বিশেষ করে মিশ্র প্রকৃতির খামার পালনে আগ্রহী হচ্ছে।
বাণিজ্যিকভাবে মিশ্র প্রকৃতির খামার পালন করার চিন্তা করেন দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতইল ইউনিয়নের শেখরপুর ধদৈর গ্রামের মুক্তদেরুল ইসলাম মুক্তা। প্রাণিসম্পদ বিভাগ নিয়মিতভাবে চিকিৎসাসেবা, টিকা প্রদান ও উন্নত ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
এসি/ আই.কে.জে