শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিলাবৃষ্টি কেন হয়?

ডেস্ক নিউজ

🕒 প্রকাশ: ০৯:২২ অপরাহ্ন, ২৪শে মার্চ ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

চৈত্রের শেষ ও বৈশাখের শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিমা মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে সাধারণত যে স্বল্পস্থায়ী প্রবল ঝড় হয়, তা কালবৈশাখী নামে পরিচিত।

যদিও প্রকৃতিতে এখনও বর্ষা আসেনি, তবুও প্রাক বর্ষার এই সময়টায় শুরু হয়ে গেছে কালবৈশাখী ঝড়। সঙ্গে নেমে আসছে শিলাবৃষ্টিও।

প্রতি বছর এই শিলাবৃষ্টিতে মানুষের হতাহতের ঘটনা কম ঘটলেও ফসলের কম-বেশি ক্ষতি হয়। বিশেষ করে আম চাষিদের ব্যাপক চিন্তায় ফেলে এই বৃষ্টি।

আবহাওয়াবিদদের মতে, শিলাবৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার তেমন কোনো উপায় সেই। প্রকৃতিতে গরম আবহাওয়া বিরাজ করলে তা হবেই। তবে সব সময় বা অধিকাংশ সময় নেমে আসবে এমনটা নয়।

মার্চ থেকে মে সময়কাল

শিলাবৃষ্টির সময়কাল হচ্ছে প্রাক বর্ষা অর্থাৎ চৈত্রের শেষ ও বৈশাখের শুরু। সে হিসেবে ইংরেজি মার্চ থেকে মে মাসেই এই বৃষ্টি হয়। এই সময়টাতে হঠাৎ বায়ুমণ্ডল গরম হয়ে ওঠায় জলীয় বাষ্প ওপরে ওঠে বরফে পরিণত হলেই কেবল তা নিচে নেমে আসে।

শিলাবৃষ্টির মূল কারণ

প্রকৃতিতে লো প্রেশার অর্থাৎ বাতাস নিচের দিকে গরম হলে তা ওপরের দিকে ওঠতে থাকে। আর আইস লেবেল হচ্ছে ১২ হাজার ফুট। লো প্রেশার শুরু হলে কালোমেঘ উলম্ব দিকে ১২ কিলোমিটারের বেশি ওপরে ওঠে যায়। তখন বাতাসের সঙ্গে থাকা জলীয় বাষ্প বরফে পরিণত হয়। আর বরফে পরিণত হওয়ার পরপরই তা আবার নিচের দিকে নামতে থাকে। এক একটা বরফের টুকরো আধাকেজি পর্যন্ত হতে পারে। নিচের নামার সেগুলো আবার বায়ুমণ্ডলে সংঘর্ষের কারণে টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে পড়ে।

কালোমেঘে সতর্ক থাকার বার্তা

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, কালোমেঘ মানেই সতর্কতা অবলম্বর করা উচিত। কেননা, এই মেঘ থেকেই কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রঝড়ের সৃষ্টি হয়। আর দশটি কালো মেঘের একটি থেকে হতে পারে শিলাবৃষ্টি।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, বৃষ্টির মেঘ দু রকম। বর্ষায় মেঘ থাকে সাদা। আর প্রাক বর্ষায় কালো। এই মেঘ আবার উলম্বভাবে লম্বা হয়। আমরা জানি বায়ুমণ্ডলের যত ওপরে ওঠা যায়, তত ঠাণ্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করে সেখানে। মেঘ যখন আইস লেবেলে পৌঁছে যায় তখনই শিলাবৃষ্টির সৃষ্টি হয়। আর কেবল কালো মেঘই উলম্ব দিকে ১২ থেকে ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠে যায়।

আরও পড়ুন: যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি

তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে কালো মেঘ দেখলেই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে কিংবা সাবধান হতে হবে। শিলাবৃষ্টি সাধারণত প্রাণের তেমন ক্ষতি না করলে কালো মেঘের বজ্রপাতে ব্যাপক ক্ষতি করে। এছাড়া বড় আকারের শিলা বিপদের কারণ হতে পারে। তাই কাল বৈশাখীর এই সময়ে সবার সাবধান হওয়া উচিত, বিশেষ করে যারা মাঠে কাজ করেন।

গত কয়েকদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হলেও আগামী তিন দিনে তেমন কোনো আভাস নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা। তিনি জানান, এই সময়ে দেশের সব বিভাগেই কালবৈশাখী ঝড় হবে। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

এসকে/ 

কালবৈশাখী শিলাবৃষ্টি

খবরটি শেয়ার করুন