ছবি: সংগৃহীত
খুলনায় শিক্ষার্থীদের ‘বিনা লাভের দোকান’ চালু হয়েছে । সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার একদিন এ দোকান চালানোর ঘোষণা ছিল। ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতকাল শুক্রবার দোকান বসেনি। তবে আগামীকাল রবিবার থেকে এ দোকান চালু হবে। শহরের ৬টি স্পটে এ দোকান চলবে। স্বল্প পরিসর হলেও ক্রেতাদের মধ্যে বিনা লাভের দোকান স্বস্তি আনে। তাই এ ধরনের দোকান বেশি করে বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গত ১৮ই অক্টোবর বিকালে মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে বিনা লাভের দোকান বসান শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার ব্যানারে মসুর ডাল ৯৯ টাকা, ডিম ১২ টাকা পিস দরে (হালি ৪৮ টাকা), আলু ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। আর লালশাক ২৫ টাকা কেজি ও প্রতিটি বড় লাউ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এদিন বিকালে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ দোকান চলে। ক্রেতারা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনেন।
কিন্তু বাজারে মসুর ডাল ১২০ টাকা, ডিমের হালি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, আলু ৫৫-৬০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০ টাকা, লালশাক ৭০-৮০ টাকা কেজি, লাউ ছোট ও মাঝারি ৪০ টাকা, বড় ৬০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে।
‘বিনা লাভের দোকানে’ পণ্য কেনা কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘এটি ভালো উদ্যোগ। এই উদ্যোগ সব জায়গায় নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য ভালো হবে।’
আরও পড়ুন: ৮ দফা বাস্তবায়নে রাজপথে থাকার ঘোষণা সনাতনীদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিনা লাভের দোকান বসানো হচ্ছে। খুলনার সব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ভাঙতে এই উদ্যোগ। প্রতি শুক্রবার এ দোকান বসানোর ঘোষণা থাকলেও ২৫শে অক্টোবর বৈরী আবহাওয়ার কারণে বসানো সম্ভব হয়নি। তবে রবিবার (২৭শে অক্টোবর) থেকে এ দোকান শহরের ৬টি স্থানে বসানো হবে। স্থানগুলো হলো দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড, খালিশপুর আলমনগর, বয়রাবাজার মোড়, নতুনবাজার মোড়, গল্লামারি হল রোড মোড় ও শিববাড়ি মোড়।’
তিনি বলেন, ‘একদিনে এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব না। প্রতিসপ্তাহে আমরা এটি পরিচালনা করার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেট কীভাবে পরিচালিত হয়, তা বুঝতে কাজ করছি। প্রয়োজন হলে সিন্ডিকেট ভাঙতে আরও পয়েন্টে বিনা লাভের দোকান বসানো হবে।’
হৃদয় ঘরামী আরও বলেন, ‘শিববাড়ি মোড়ের প্রথম পদক্ষেপে মানুষের সাড়া আমাদের উজ্জীবিত করেছে। আর প্রথম দিনের দোকান থেকে ব্যাগ সরবরাহ করতে গিয়ে আমাদের ৩০০ টাকা লোকসান হয়। এ অভিজ্ঞতার আলোকে আগামীর দোকান পরিচালিত হবে। আগামীতে পণ্য সরবরাহ করা ব্যাগের একটি মূল্যও নির্ধারণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনার সমন্বয়ক জহুরুল ইসলাম তানভীর বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে সবজিসহ পণ্যগুলোর দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৃণমূল কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা বিনা লাভের দোকান দেয়। ধীরে ধীরে ৩১টি ওয়ার্ডে এই দোকান ছড়িয়ে পড়বে। সিন্ডিকেটের কালো হাত শনাক্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ দোকান কার্যক্রম চলবে।’
এসি/ আই.কে.জে