ছবি: সংগৃহীত
পেঁয়াজ আমদানির প্রভাব পড়েছে বাজারে। দেশে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা এবং ভারত থেকে আমদানি হওয়ায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে । কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। একই চিত্র আলুর ক্ষেত্রে হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বাজারে নতুন ভারতীয় আলু এসেছে বেশ কিছুদিন আগেই। এখন দেশি নতুন আলুও চলে এসেছে। তবে বাজারে নতুন আলু আসার পরেও কমেনি পুরনো আলুর দাম। সমানতালে একই দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন ও পুরনো আলু।
মঙ্গলবার (১০ই ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১ কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় আলু-পেঁয়াজের বাজারের বর্তমান চিত্র।
গত শনিবার (৭ই ডিসেম্বর) একদিনেই দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে এসেছে ১১৭১ টন পেঁয়াজ। ভারত থেকে এই পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। আর এই বড় পরিমাণ আমদানির ফলে এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। কমতে শুরু করেছে সবধরনের পেঁয়াজের দাম। আমদানির পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজও বাজারে আসতে শুরু করেছে। এর ফলাফলও বাজারে দৃশ্যমান।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট ও বড় সাইজের পেঁয়াজ একই দামে বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা করে প্রতি কেজি। তবে দুই-একটি দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
শুক্রবার (৬ই ডিসেম্বর) প্রতি কেজি ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা। এরমধ্যে প্রতি কেজিতে ক্রস ও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা।
ভারতীয় নতুন আলু বাজারে এসেছে বেশ কিছুদিন আগেই। এখন দেশি নতুন আলুও চলে এসেছে। তবে নতুন এই আলু আসার পরেও পুরনো আলুর দাম এখনও কমেনি। আজকে বাজারে প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর পুরনো লাল আলু ৮০ টাকা, সাদা আলু ৮০ টাকা, বগুড়ার আলু ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে শুক্রবারের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় নতুন আলু দাম প্রতি কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। তবে সব ধরনের পুরনো আলুর দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
এসময় আলু-পেঁয়াজের বিক্রেতা মো. লিটন গণমাধ্যমকে বলেন, ভারত থেকে অনেক পেঁয়াজ আসছে তাই পেঁয়াজের দাম কমেছে। আবার আমাদের দেশি পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে। আরও কমে যাবে।
নতুন আলুর দাম কমেছে অথচ পুরনো আলুর দাম এখনও কমেনি এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুরনো আলু এখনও মানুষ কিনছে আবার অনেক চাষি চাষ করার জন্য পুরনো আলু কিনে নিচ্ছে। তাই এই আলুর দাম কমছে না।
আরেক বিক্রেতা মো. শরীফ বলেন, পুরনো আলু দিয়ে যেভাবে কাজ (রান্নার ক্ষেত্রে) করা যায় সেটা নতুন আলু দিয়ে করা যায় না। পুরনো আলুর মতো পরিপক্ব হতে নতুন আলুর আরও দুই-তিন মাস সময় লাগবে। হোটেলগুলোতে এখনও পুরনো আলু ব্যবহার করে। তাই পুরনো আলুর চাহিদা বাজারে এখনও আছে। এই কারণেই এটার দাম কমছে না।
আরও পড়ুন: ভারত নয়, অন্য দেশ থেকে আলু-পেঁয়াজ কিনবে বাংলাদেশ!
এদিকে, বাজার করতে আসা ক্রেতা মাহফুজুর রহমান বলেন, পেঁয়াজের দাম কমেছে এটা ভালো। তবে আরও কমা উচিত। কিন্তু আলু যে আমরা ৮০ টাকা করে কিনি এটা মানা যায় না। তবে মানা না গেলেও তো কিনছি। কিছু করার নাই, আমরা বাধ্য হয়েই কিনছি।
শারমিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, নতুন আলু আর পুরনো আলুর দাম একই। এটা কীভাবে হয়? এ রকম তো হয় না। এবার আলু আমাদেরকে বেশি দামেই কিনে খেতে হলো। তবে এখন যেহেতু দুই আলুর দাম একই তাই নতুন আলুই নিচ্ছি। এটাই ভালো। পুরনো আলু এখন দ্রুত নষ্ট হয়, আবার গাছ হয়ে যায়।
এদিকে আদা-রসুনের দামও কিছুটা কমেছে। আজকে দেশি রসুন ২৫০-২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবারের বাজারের সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, আজকে প্রতি কেজিতে দেশি রসুনের দাম কমেছে ১০ টাকা, চায়না রসুনের দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা। আর ভারতীয় আদার দাম কমেছে ২০ টাকা প্রতি কেজিতে।
এসি/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন