নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক। ছবি: সংগৃহীত
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চেয়েছেন দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। একই সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবির পাশাপাশি নারীবিদ্বেষ তৈরিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ‘অপপ্রচার ও অপতৎপরতার’ প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (৬ই মে) এক বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা এ অবস্থান জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুব্রত চৌধুরী, সালমা আলী ও সারা হোসেন।
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরো রয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, অধ্যাপক নায়লা জামান খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান ও লেখক পাভেল পার্থ প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে কয়েক দিন ধরে হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু ধর্মীয় নামধারী সংগঠনের প্রতিনিধি ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আসছে। তাদের কেউ কেউ এ কমিশন বাতিল না করা হলে সরকার উৎখাত, দেশ অচল করে দেওয়ার মতো হুমকি দিয়েছেন। এসব দাবি শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, একই সঙ্গে এটি জনমনে নারীবিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে। এসব বক্তব্যকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, ‘আমরা অনতিবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চাই। সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এমন বক্তব্য শুধু নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কিংবা সরকারের জন্য নয়, দেশের জনগণ ও তাদের অধিকারের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পুরো কমিশনকে বাতিল করার দাবির পেছনে গভীর দুরভিসন্ধি এবং রাজনৈতিক ও কায়েমী স্বার্থ জড়িত। প্রকাশ্যে নারীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ও কমিশনের সদস্যদের চরিত্র হনন করায় ওই গোষ্ঠী এবং অন্তর্বর্তী সরকার উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, যারা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাইছেন, তাদের আসল উদ্দেশ্য নারীকে অবদমিত রেখে, বৈষম্যকে জিইয়ে রেখে নিজেদের গোষ্ঠীগত ও কায়েমী স্বার্থ হাসিল করা। দেশ অচল করার হুমকি দিয়ে তারা কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছেন, সেটি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সরকারকে তদন্তের মাধ্যমে এসব উসকানিদাতা ও তাদের ইন্ধনদাতাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন