শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা মাহফুজ আনামের *** প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহৃত তেলের জন্য হাঙর শিকার, বিলুপ্তি ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ *** শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ‘তারেক রহমান যাকে ইচ্ছা তাকে প্রধান উপদেষ্টা বানাতে পারতেন’ *** শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে *** চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করলেই খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে: মির্জা ফখরুল *** লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে সরকারের ব্যর্থতা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা *** খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে যাচ্ছে *** ঢাকায় পৌঁছেছেন ডা. জুবাইদা *** কলকাতায় পাঁচ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহৃত তেলের জন্য হাঙর শিকার, বিলুপ্তি ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫১ অপরাহ্ন, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫

#

গালপার হাঙর। ছবিসূত্র: ন্যাচার পিকচার লাইব্রেরি

উজ্জ্বল সবুজ চোখ আর সরু দেহের গালপার হাঙর দেখতে অদ্ভুত হলেও তারা খুবই প্রাচীন প্রাণী; লাখো বছর ধরে এরা পৃথিবীতে আছে। সাধারণত ২০০-১,৫০০ মিটার গভীর সমুদ্রে এদের পাওয়া যায়। কিন্তু গভীর সমুদ্রে থাকার পরও এই হাঙরগুলোর জীবন এখন বড় হুমকির মুখে। সূত্র: সিএনএন।

কেন তারা বিপন্ন হচ্ছে?

গালপার হাঙরের তিন-চতুর্থাংশ প্রজাতি এখন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। মূল কারণ তাদের লিভারের তেল। এই তেলে থাকে স্কোয়ালিন, যা প্রসাধনী পণ্যে (ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন, আফটারশেভ, এমনকি কিছু চিকিৎসা পণ্যেও) ব্যবহৃত হয়। স্কোয়ালিনের জন্য গালপার হাঙরকে ব্যাপকভাবে শিকার করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে স্কোয়ালিনের বাজার মূল্য ছিল ১৫০ মিলিয়ন ডলার।

এক টন স্কোয়ালিন পেতে লাগে প্রায় ৩,০০০ হাঙর। প্রসাধনী শিল্পই স্কোয়ালিনের সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী। কিছু কম্পানি (ল’রিয়াল, ইউনিলিভার) হাঙরের তেল ব্যবহার বন্ধ করেছে। অনেকে কম্পানি এখন উদ্ভিদ-ভিত্তিক বিকল্প ব্যবহার করছে। তবে কিছু ব্র্যান্ড এখনও হাঙরের তেল ব্যবহার করে।

নতুন আন্তর্জাতিক সুরক্ষা

চলতি বছরের ২৮শে নভেম্বর উজবেকিস্তানের সমরকন্দে অনুষ্ঠিত বিপন্ন প্রজাতির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত কনভেনশনের (সিআইটিইএস) সম্মেলনে ৭০টির বেশি হাঙর ও রে প্রজাতিকে বাণিজ্যের বিরুদ্ধে শক্ত সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। গালপার হাঙর এখন সিআইটিইএস-এর অ্যাপেন্ডিক্স-২ এ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত হাঙরদের বিলুপ্তি রোধে বড় ভূমিকা রাখবে।

এর আগে গভীর সমুদ্রের কোনো হাঙর (সিআইটিইএস)-এর সুরক্ষায় ছিল না। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতি আর অগভীর পানিতে মাছ কমে যাওয়ায় এখন গভীর সমুদ্রেই বেশি মাছ ধরা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে—গভীর সমুদ্রের ২/৩ ভাগ হাঙরই লিভার তেল তৈরির জন্য ধরা পড়ে। গালপার হাঙরের লিভার তেলে ৭০% পর্যন্ত স্কোয়ালিন থাকে। যা অন্য যেকোনো হাঙরের চেয়ে বেশি। ফলে এদের সংখ্যা কিছু অঞ্চলে ৮০% পর্যন্ত কমে গেছে।

ধীরে বংশবৃদ্ধি—বিপদের মূল কারণ

এ প্রজাতির হাঙর খুব ধীরে বড় হয় এবং কম বাচ্চা দেয়। তাই একবার সংখ্যা কমে গেলে আবার আগের অবস্থায় ফিরতে অনেক বছর লেগে যায়। উদাহরণস্বরূপ অস্ট্রেলিয়ার একটি গুলপার প্রজাতির সংখ্যা মাত্র ২৫% ফিরে পেতে লাগবে ৮৬ বছর।

কেন আন্তর্জাতিক নিয়ম জরুরি?

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু কম্পানিকে চাপ দিলেই হবে না, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

যদি দেশগুলো নিয়ম না মেনে বাণিজ্য চালায়, (সিআইটিইএস) তাদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য স্থগিতের মতো কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। অতিরিক্ত শিকার, ধীর বংশবৃদ্ধি আর লিভার তেলের বিপুল চাহিদার কারণে গুলপার হাঙর চরমভাবে বিপন্ন। নতুন (সিআইটিইএস) সুরক্ষা এই প্রজাতিগুলোকে বিলুপ্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

জে.এস/

গালপার হাঙর

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250