ছবি: তারেক রহমানের ফেসবুক থেকে নেওয়া
প্রাণী ও প্রকৃতি নিয়ে নিজের স্মৃতি-অনুভূতি-দায়িত্বের কথা জানালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোষা বিড়ালের সঙ্গে নিজের ছবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিড়ালটি আমার মেয়ের। ও এখন অবশ্য সবারই হয়ে গিয়েছে। আমরা সবাই ওকে আদর করি।’
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তারেক রহমান। গতকাল সোমবার তার সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়। আজ মঙ্গলবার (৭ই অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। এই পর্বের একটি অংশে তিনি প্রাণী অধিকার ও প্রকৃতি নিয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেছেন।
তারেক রহমানের কাছে বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল, তাকে সম্প্রতি প্রাণী অধিকার রক্ষা নিয়ে বেশ সোচ্চার দেখা গেছে। এ-সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের বাইরে পোষা বিড়ালের সঙ্গে তার নিয়মিত ছবি দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল কীভাবে?
জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘প্রথমত এখানে একটু ক্লিয়ার করে নিই, বিড়ালটি আমার মেয়ের বিড়াল। ও এখন অবশ্য সবারই হয়ে গিয়েছে। আমরা সবাই ওকে আদর করি।’
এ বিষয়ে বলতে গিয়ে নিজের ছোটবেলার প্রসঙ্গে টানেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি হচ্ছে, এ রকম শুধু বিড়াল নয়, আমি এবং আমার ভাই যখন ছোট ছিলাম, আমাদের একটি ছোট কুকুরও ছিল। ইভেন, তখন আমাদের বাসায় আম্মা হাঁস-মুরগি পালতেন। ছাগলও ছিল আমাদের বাসায়। উনি ছাগলও কয়েকটি পালতেন। তো স্বাভাবিকভাবেই আপনি যেই দৃষ্টিকোণ থেকেই বলেন, পোষা কুকুর-বিড়ালই বলেন, বাই দ্য ওয়ে, কবুতরও ছিল আমাদের বাসায়। শুধু কবুতর নয়, আমাদের বাসায় একটি বিরাট বড় খাঁচা ছিল। সেই খাঁচার মধ্যে পাখি ছিল। বিভিন্ন রকমের এবং আবার আরেকটি খাঁচা ছিল, যেটার মধ্যে একটা ময়না ছিল।’
ময়না পাখিটি বরিশাল থেকে আনা হয়েছিল বলে জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ময়নাটা আমরা বরিশাল থেকে এনেছিলাম। ও আবার বরিশালি ভাষায় কথাও বলত। টুক টুক করে মাঝেমধ্যে কিছু কিছু কথাও বলত। তো কাজেই এই বিষয়টি হঠাৎ করেই না। এই পশুপাখির প্রতি যেই বিষয়টি, এটির সঙ্গে আমি কমবেশি ছোটবেলা থেকে জড়িত আছি। হয়তো এটি এখন প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্নভাবে। বাট, এটির সঙ্গে আমি বা আমার পরিবার, আমরা অনেক আগে থেকেই আছি।’
বিবিসি বাংলার একই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘কুকুর-বিড়াল ছিল, গরু-ছাগল ছিল, হাঁস-মুরগি ছিল। পাখি ছিল, ময়না ছিল, কবুতর ছিল। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যদি আমরা চিন্তা করি, আমাদের আল্লাহ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন। আমাদের দায়িত্ব আল্লাহর সৃষ্টি যা কিছু আছে প্রকৃতির, তার প্রতি যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি একটি বিষয়।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আমরা যদি মানবিক দৃষ্টিকোণ অথবা আমরা যদি নেচার থেকেও বিষয়টি দেখি, দেখুন ওরা না থাকলে আমাদের জন্য বেঁচে থাকা কষ্টকর। প্রকৃতি যদি না থাকে, প্রকৃতির ব্যালেন্স যদি না থাকে।’
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শেয়ার করা তিনটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় চলতি বছরের এপ্রিলে ভাইরাল (আলোচিত) হয়। ছবিগুলোতে দেখা যায়, তিনি একটি বিড়ালকে মোবাইলে কিছু দেখাচ্ছেন, আর বিড়ালটি গভীর মনোযোগে তা পর্যবেক্ষণ করছে।
তারেক রহমান নিজেই ফেসবুকে এই ছবিগুলো শেয়ার করেন, যা পরবর্তীতে বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজেও প্রকাশিত হয়। পোস্টে ক্যাপশন দেওয়া হয়— ‘লিডার’।
ছবিগুলো পোস্টের পর মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। হাজার হাজার নেটিজেন ছবিগুলো শেয়ার করে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। কেউ লিখেন, ‘প্রিয় লিডার’, কেউ আবার ‘আগামীর প্রাণিবান্ধব বাংলাদেশ’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অনেকেই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই মুহূর্তটি লাভ ইমোজি দিয়ে শেয়ার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতি সমর্থন জানান।
খবরটি শেয়ার করুন