বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিল বিএনপি-জামায়াতসহ ২৯ দল *** সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পর্তুগাল *** রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে উভয় কক্ষের সদস্যদের গোপন ভোটে *** ১৮৫ বছরের পুরোনো বুনো মহিষের শিং পাহাড়পুর জাদুঘরে হস্তান্তর *** প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত *** শিক্ষকের বিকল্প হবে চ্যাটজিপিটি *** শক্তি ও মালিকানা যার হাতে, তাকেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে: মির্জা ফখরুল *** পিআর পদ্ধতিতে হবে ১০০ সংসদীয় আসনের উচ্চকক্ষ, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত *** কিছু দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা *** গোপালগঞ্জে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি: সেনাসদর

ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চান দেশটির ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, ৩১শে জুলাই ২০২৫

#

ছবি: বিবিসি

গাজায় চলমান নৃশংসতা বন্ধ না করলে ইসরায়েলের ওপর ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের ৩১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (২৯শে জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানকে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পী, কবি, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ২২ মাসে ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনাহারে–অর্ধাহারে দিন কাটছে গাজার বেশিরভাগ বাসিন্দার। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এই আহ্বান জানালেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন অস্কারজয়ী ইসরায়েলি চলচ্চিত্র নির্মাতা ইউভাল আব্রাহাম, ইসরায়েলের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল বেন–ইয়ার, ইসরায়েলের পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার আব্রাহাম বার্গ। এ ছাড়া ইসরায়েলের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘ইসরায়েল প্রাইজ’ পাওয়া বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিও এতে স্বাক্ষর করেছেন।

বিবৃতিতে ইসরায়েলের এসব বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, ‘গাজার বাসিন্দাদের অনাহারে রেখে মেরে ফেলতে চাইছে ইসরায়েল। পাশাপাশি উপত্যকাটির লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোর করে গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর এই নৃশংসতা বন্ধ না হলে এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর না করলে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।’

ইসরায়েলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দেশটির বিশিষ্ট নাগরিকদের এ ধরনের একটি যৌথ বিবৃতি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, ইসরায়েলের সরকারের খোলামেলা সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দেশটির নাগরিকদের এ ধরনের বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা বিরল। এ ছাড়া ইসরায়েল এমন একটি দেশ, যেখানে এ ধরনের আহ্বান কেউ জানালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন ও বিধিবিধান রয়েছে।

যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরও রয়েছেন ইসরায়েলি চিত্রশিল্পী মাইকেল না’আমান; আন্তর্জাতিক পুরস্কারজয়ী দেশটির তথ্যচিত্রনির্মাতা রা’আনান আলেক্সান্দ্রোভিচ, গোল্ডেন লায়ন পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্র লেবানন-এর পরিচালক স্যামুয়েল মাওজ, ইসরায়েলি কবি আহারোন শাবতাই ও কোরিওগ্রাফার ইনবাল পিন্টো প্রমুখ।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের সমালোচনার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলে বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থামছে না। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব বলছে, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরুর পর গাজায় প্রতিদিন গড়ে ৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে কয়েক মাস ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে সম্প্রতি আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) মাধ্যমে গাজায় স্বল্প পরিসরে ত্রাণ দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু ইসরায়েল ও আমেরিকার পরিচালিত জিএইচএফের ত্রাণবিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রতিদিনই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে কয়েক ডজন করে ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর। এমনকি ইসরায়েলের অভ্যন্তর থেকেও নানাভাবে চাপ আসছে।

ইসরায়েলের দুই শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা বেতসেলেম এবং ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েল প্রথমবারের মতো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চলছে। ইসরায়েলের দুই মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকেও এ ধরনের বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা বিরল।

আমেরিকায় থাকা ইহুদিদের সংগঠন রিফর্ম মুভমেন্ট এক বিবৃতিতে গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ার জন্য ইসরায়েলের সরকারকে দোষারোপ করে। সংগঠনটি বলেছে, ‘খাবার, পানি, ওষুধ ও বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া অমার্জনীয় অপরাধ। ইসরায়েলের প্রতি ভালোবাসা যেন আমাদের দুর্বলদের কান্না অনুধাবনে অন্ধ করে না দেয়। আসুন, এ মুহূর্তের নৈতিক এই চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে আমরা সোচ্চার হই।’

ইসরায়েল নাগরিক বিবৃতি ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন