রবিবার, ১৯শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নাহিদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানে যা বললেন সালাহউদ্দিন *** থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’ আজ *** নাশকতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেলে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হবে: সরকারের বিবৃতি *** তারেক রহমানের বিবিসির সাক্ষাৎকারে ৮০ ভাগ নেটিজেনের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া *** ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তপশিল: সিইসি *** ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে এনসিপি *** চীন সরকারের ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান, শীর্ষস্থানীয় ৯ জেনারেল বরখাস্ত *** ঢাকামুখী ৮ ফ্লাইট গেল চট্টগ্রাম ও কলকাতায় *** জুলাই সনদে কাল স্বাক্ষর করবে গণফোরাম *** যারা বলেন এবার ‘জামায়াতের শাসন দেখি’, তাদের উদ্দেশ্যে যা বললেন আনু মুহাম্মদ

বাসরঘরের দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক, হয়েছে মামলাও

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০০ পূর্বাহ্ন, ১৫ই অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতার নাম যখন রাজ কাপুর, তখন তার সিনেমায় সাহসী দৃশ্য থাকবে না, তা কি হয়! তবে ১৯৭৮ সালে ‘সত্যম শিবাম সুন্দরম’ মুক্তির পর বিতর্কটা মাত্রা ছাড়ায়। সেটা এতটাই যে দেব আনন্দ সরাসরি সিনেমাটির সমালোচনা করেন, গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে নির্মাতার দূরত্বও তৈরি হয়। কী হয়েছিল সেই সময়ে? সে গল্প জানতে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় তিন দশক। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম, এনডিটিভি।

বলিউডের সোনালি যুগে খুব কম নির্মাতাই রাজ কাপুরের মতো সাহস দেখাতে পেরেছিলেন। ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ সেই সাহসিকতারই এক নিদর্শন। ছবির নায়িকা জিনাত আমান, ‘রুপা’ চরিত্রে অভিনয় করে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, তেমনি বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন।

ছবির ‘সাইয়াঁ নিকাস গায়ে’ গানটির দৃশ্যেই মূল বিতর্কের সূত্রপাত। এটি ছিল ছবির বিয়ের রাতের দৃশ্য, যেখানে জিনাত আমান ও শশী কাপুরকে দেখা যায়। রাজ কাপুর এ দৃশ্য সাহসী ভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছিলেন। জিনাত আমানের পোশাক ও ভঙ্গিমা সে সময়ের দর্শকদের কাছে ছিল অস্বাভাবিকভাবে খোলামেলা। বিশেষত একটি মুহূর্তে তাকে প্রায় উন্মুক্ত অবস্থায় দেখা যাওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ হন।

ছবিটি মুক্তির পর সমাজের তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে। রাজ কাপুরের বিরুদ্ধে হিমাচল প্রদেশের এক ব্যক্তি মামলা করেন। অভিযোগ, ছবিটি অশালীন ও নামের মধ্যেই অশালীন আভাস আছে। অনেকেই রাজ কাপুরের বিরুদ্ধে নারীর শরীরকে ‘আধ্যাত্মিকতা’ ও ‘নির্মলতার’ আড়ালে ব্যবহার করার অভিযোগ তোলেন।

ছবির গানগুলো গেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর, কিন্তু সংগীত পরিচালকের বিষয়ে মতবিরোধে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়। এমনকি অভিনেতা-নির্মাতা দেব আনন্দও ছবিটির সমালোচনা করে বলেন, রাজ কাপুর নারীর সৌন্দর্যকে ‘অতিরিক্ত রোমান্টিক’ ভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন।

সব সমালোচনা সত্ত্বেও ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পায়। সময়ের সঙ্গে এটি বলিউডের অন্যতম প্রতীকী ও সাহসী সিনেমা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।

জিনাত আমান এখনো সাক্ষাৎকার দিতে গেলে কথা বলতে হয় ‘সত্যম শিবাম সুন্দরম’ সিনেমা নিয়ে। বছর কয়েক আগে ইনস্টাগ্রামে অভিনেত্রী নিজেই লিখেছিলেন সিনেমাটি নিয়ে। জিনাত লেখেন, ‘ছবির চুম্বন দৃশ্য নিয়ে হুলুস্থুল হয়েছিল, তবু তা ছিল খুবই সংযত।’

পোস্টটিতে জিনাত শেয়ার করেছেন ছবির একটি দৃশ্য, যেখানে দেখা যায় তার ও শশীর প্রথম পর্দার চুম্বন দৃশ্য। জিনাত লিখেছিলেন, ‘আমি এই ক্লিপ শেয়ার করলাম দুটি কারণে। প্রথমত, এটি আমার ক্যারিয়ারের একটি বড় মুহূর্ত ছিল—প্রথম অনস্ক্রিন চুমু। তখন এটা নিয়ে প্রবল হইচই হয়েছিল, কিন্তু আসলে দৃশ্যটা খুবই সংযত ছিল। শুটিংয়ের সময় একটুও অস্বস্তি লাগেনি আমার। দ্বিতীয়ত, কারণ, সেই স্কুলছাত্রী জিনাত এই পোস্ট দেখে নিশ্চয়ই খুশি হতো—ভাবতেও পারেনি, তার স্বপ্নের মানুষটির সঙ্গে একদিন সিনেমায় কাজ করবে!’

জিনাত জানান, শশী কাপুরকে তিনি প্রথম দেখেন মহারাষ্ট্রের পানচগনির বোর্ডিং স্কুলে। তখন অভিনেতা তার থিয়েটার দল ‘শেক্‌সপিয়ারানা’ নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করতে এসেছিলেন। ‘তিনি ছিলেন প্রত্যেক স্কুলছাত্রীর স্বপ্ন! সবার ক্রাশ। মঞ্চে তার উপস্থিতি আমাদের মোহিত করে দিয়েছিল,’ লিখেছেন জিনাত।

মুম্বাইয়ে অভিনয়ে নামার আগেও শশী কাপুরকে নিয়ে জিনাতের মোহ কাটেনি। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের বাসার কাছেই থাকতেন শশী কাপুর। শোনা গিয়েছিল, তিনি প্রতিদিন বিকেল ছয়টায় হাঁটতে বের হন। আমি আর আমার বান্ধবীরা প্রতিদিন হাঁটতে যাওয়ার অজুহাতে বের হতাম শুধু তাকে একঝলক দেখার আশায়!’

পরবর্তী সময়ে শশী কাপুর ও জিনাত আমান একসঙ্গে কাজ করেছেন ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’, ‘রোটি কাপড়া ওউর মকান’, ‘চোরি মেরা কাম’, ‘বকিল বাবু’সহ একাধিক ছবিতে। জিনাত লিখেছেন, ‘তিনি ছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত, রসিক ও দারুণ এক মানুষ। খুব উষ্ণ হৃদয়ের ছিলেন, তার হাসি ও কথায় চারপাশের সবাই প্রাণ পেত।’

জে.এস/

সত্যম শিবাম সুন্দরম

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250