ছবি: সংগৃহীত
যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রাম যেন প্রকৃতির এক টুকরো কবিতা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে প্রকৃতির আঁচলে।
সরিষার ক্ষেতের সৌন্দর্যে শুধু গ্রামের মানুষ নয়, আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই এখানে আসেন। প্রকৃতিপ্রেমী ও আলোকচিত্রীদের কাছে এ সময়ে খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের সরিষা ক্ষেত বিশেষ আকর্ষণ। এখানে দাঁড়ালে শীতল বাতাসে সরিষার মিষ্টি গন্ধ মনে এনে দেয় এক নতুন সতেজ অনুভূতি।
সরিষার ক্ষেতজুড়ে মৌমাছি আর প্রজাপতির ব্যস্ত আনাগোনা ক্ষেতটির সৌন্দর্য ও কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে তোলে। মৌমাছিরা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে করতে পরাগায়ণের কাজও করে। এদের কর্মতৎপরতার ফলে সরিষার ফলন বাড়ে।
কৃষক মোহাম্মদ রমজান জানালেন, মৌমাছি আর প্রজাপতির আনাগোনা ফলনের জন্য আশীর্বাদ। প্রকৃতির এই দান আমাদের চাষাবাদে অনেক সুবিধা এনে দেয়।
সরিষার হলুদ ফুলে নানা রঙের প্রজাপতিরা যেন নৃত্য করে। বিশেষ করে লাল, নীল, সাদা রঙের প্রজাপতির উপস্থিতি এক মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে। এরা ফুলে বসে, ডানা মেলে, আবার উড়ে যায়। বাতাসে ফুলের মিষ্টি গন্ধ আর প্রজাপতির ডানার ঝাপটা এক সুরেলা ছন্দ তোলে।
আরও পড়ুন: সুগন্ধি মরিচ চাষে বছরে ৮ লাখ টাকা আয় সুনীলের
স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, সরিষা চাষ শুধু তাদের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম নয়, বরং এটি তাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। গ্রামের মানুষেরা সরিষার তেল বানিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রিও করেন।
ক্ষেতের যত্ন নেওয়ার গল্প বলতে গিয়ে হাসান বললেন, ‘এবার ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। হলুদ সরিষার ক্ষেত শুধু আমাদের আয়ই বাড়ায় না, গ্রামের সৌন্দর্যও বাড়িয়ে দেয়।’
লালচে সূর্যের আলো যখন সরিষার ফুলের ওপর পড়ে, তখন পুরো ক্ষেত যেন সোনালি আভায় আলোকিত হয়ে ওঠে। মৌমাছি আর প্রজাপতির উপস্থিতি সেই মুহূর্তগুলোকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের সরিষা ক্ষেত শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যই নয়, এটি যেন গ্রামীণ জীবনের সরলতার প্রতীক। যারা ব্যস্ত শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে চান, তাদের জন্য খাটুয়াডাঙ্গা গ্রাম হতে পারে এক আদর্শ গন্তব্য।
এসি/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন