ছবি: সংগৃহীত
শেরপুর সদরে নাচ-গানের আসর বন্ধ করে ফেরার পথে প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন মুসল্লিরা। এতে চরাঞ্চলের বড় হুজুরখ্যাত আজিজুর রহমানসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার (১৭ই অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চরভাবনা নয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত অন্যরা হলেন শাহীনুর রহমান শাহীন ও মোকলেছুর রহমান। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে রাতেই বিক্ষোভ করেন মুসল্লিরা। গতকাল শনিবার (১৮ই অক্টোবর) শতাধিক কওমি মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রেখে শেরপুরের নন্দীর বাজার এলাকার ঝগড়ারচর-বকশীগঞ্জ সড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচি থেকে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার না করা পর্যন্ত নয়াপড়া গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যান্য গ্রামে যাতায়াত বন্ধ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত। কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। তারপরও পুলিশ হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় আলেম-ওলামাদের সংগঠন ‘ইত্তেফাকুল উলামা’র উদ্যোগে গত চার-পাঁচ বছরে শেরপুর সদরের কামারেরচর, চরমোচারিয়া ও চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের অনেক নাচ-গানের আসর বন্ধ হয়েছে।
ইত্তেফাকুল উলামার সংগঠক ও কামারেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহতামিম বিল্লাহসহ স্থানীয়রা জানান, ১০-১৫ দিন আগে নয়াপাড়া গ্রামে জারি গানের আসর হয়। সেখানে ছেলেমেয়েরা প্রকাশ্যে অসভ্যতা করে। বিষয়টি জানতে পেরে চরাঞ্চলের আলেম আজিজুর রহমান তা বন্ধে অনুরোধ জানান।
তবে শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে আয়োজকেরা আলেমদের চ্যালেঞ্জ করেন। যে কোনো মূল্যে তারা জারি গানের আসর বসানোর ঘোষণা দেন। গ্রামের কয়েকজন রাতে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাফরের জমিতে আসর বসান।
রাত ৯টার দিকে আড়াই শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা ও মুসল্লি কামারেরচর বাজারে জড়ো হন। তারা মিছিল নিয়ে আসরে গেলে সবাই পালিয়ে যান।
এ সময় গানের মঞ্চের শামিয়ানা ছিঁড়ে আগুন দেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে অদূরে মুসল্লিদের ওপর অতর্কিতে হামলা করেন ৫০-৬০ জন। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ছাড়াও দেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করেন। এ সময় বড় হুজুরসহ তিনজন আহত হন।
ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই চরভাবনা কান্দাপাড়া মোড়ে বিক্ষোভ করেন মুসল্লিরা। চরাঞ্চলের সব মাদ্রাসা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর গতকাল সকাল ১০টা থেকে চরভাবনা চার রাস্তা মোড়ে হাজারো মুসল্লি ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করেন।
খবরটি শেয়ার করুন