বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** এস আলমকে নিয়ে গভর্নর বললেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ *** গোলাম আযম জাতির 'শ্রেষ্ঠ সন্তান' হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান কোথায়—প্রশ্ন মির্জা আব্বাসের *** শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ‘টানাপোড়েন আছে’— এটা বাস্তবতা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড *** অপারেটর করলেন ভুল, ক্যারি করলেন সেঞ্চুরি *** উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার বাংলাদেশি হুমকি সহ্য করা হবে না: আসামের মুখ্যমন্ত্রী *** আমাদের ‘নসিহত’ করা হয়েছে, নির্বাচন নিয়ে উপদেশ চাই না: তৌহিদ হোসেন *** ভারতে নারীর নিকাব বিতর্ক: মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ *** বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে কী বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় *** হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসকে সিপিজের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, ৯ই ডিসেম্বর ২০২৫

#

কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছে। সিপিজের ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।

১০ই ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে সিপিজের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরিচালক বেহ লি ইয়ি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠিটি লিখেছেন।

চিঠিতে বলা হয়, সিপিজের কাছে থাকা তথ্য-উপাত্ত অনুসারে বাংলাদেশে বর্তমানে হত্যার অভিযোগে চার সাংবাদিক কারাগারে বন্দী আছেন। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সপক্ষে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের ঘাটতি আছে। মনে হচ্ছে, তাদের সংবাদ প্রতিবেদন ও সম্ভাব্য রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে প্রতিহিংসামূলকভাবে এসব মামলা করা হয়েছে।

সিপিজের চিঠিতে নাম উল্লেখ করা চার সাংবাদিক হলেন ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত। এতে বলা হয়েছে, বারবার এই সাংবাদিকদের জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ে যে ধরনের বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে বন্দীদের মানবাধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা (বন্দী সাংবাদিকেরা) ৩৬ বর্গফুট (৩ দশমিক ৩৪ বর্গমিটার) আকারের অত্যন্ত ছোট কক্ষে বন্দী আছেন। কক্ষগুলোতে দরজার পরিবর্তে ধাতব বেষ্টনী দেওয়া। এতে তাদের ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে থাকতে হয়, সঙ্গে রয়েছে মশার উপদ্রব। তারা কংক্রিটের মেঝেতে ঘুমান, কোনো ম্যাট্রেস নেই। কারাগার থেকে সরবরাহ করা খাবারের পরিমাণ অপর্যাপ্ত। প্রায়ই সেগুলো খাওয়ার উপযোগী থাকে না।

কারাগারের চিকিৎসাসেবা পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে চিঠিতে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, কারাগারে কোনো স্থায়ী চিকিৎসক নেই, নিয়মিত পরীক্ষার সুবিধা নেই এবং পরিবার থেকে সরবরাহ করা না হলে বন্দীরা ওষুধ পান না। যারা ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ার (ঘুমের সময় শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা) মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের কয়েক মাস ধরে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

২০২৪ সালের নভেম্বরে দ্য ডেইলি স্টারকে মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ওই সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচার হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং তার সরকার তা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অথচ গত বছর প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পরই ওই চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদ এবং ইন্টারন্যাশনাল কনভেনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টির উল্লেখ করে সিপিজের চিঠিতে বলা হয়, বিচারব্যবস্থা বারবারই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার–সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা পূরণ করার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েছে সিপিজে।

চিঠিতে মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলা হয়, ‘আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যা বাংলাদেশে কারাবন্দী সব সাংবাদিককে তাদের পরিবারের কাছে ফেরার এবং নতুন করে কাজ শুরু করার সুযোগ দেবে।’

সিপিজে মনে করে, বাস্তব সংস্কার নিশ্চিত করার জন্য অতীতের চর্চাগুলো থেকে একেবারে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। অতীতের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি করা যাবে না।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যখন আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, তখন সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে সংবাদ সংগ্রহের অধিকারের প্রতি সম্মান রাখাটা সব রাজনৈতিক দলের জন্য জরুরি।

সাংবাদিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250