ছবি: সংগৃহীত
চার বছর পরপর জন্মদিন আসে গুণী অভিনেতা, নাট্যকার ও পরিচালক মামুনুর রশীদের। শিল্প-সাহিত্যেও একেবারে ব্যতিক্রমী মেধার এই বরেণ্য মানুষটি তার জন্ম তারিখ দিয়েও যেন আলাদা। খ্যাতিমান অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক মামুনুর রশীদের জন্মদিন অধিবর্ষে অর্থাৎ ২৯শে ফেব্রুয়ারি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ জন্মদিন নানান রঙে রাঙাতে তাই আয়োজন করা হয়েছে উত্সবের, আনন্দ মিলনমেলার। মামুনুর রশীদের জন্মদিন উপলক্ষে তিন দিনের বিশেষ উত্সবের আয়োজন করেছে তার হাতে গড়া নাট্যদল ‘আরণ্যক’।
উত্সবে থাকবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটকের মঞ্চায়ন, সংগীত, নৃত্য, সেমিনার, প্রদর্শনী, গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, সংবর্ধনা ও থিয়েটার আড্ডা। ২৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে ২রা মার্চ আয়োজনটি হবে শিল্পকলা একাডেমি, চ্যানেল আই প্রাঙ্গণ ও মহিলা সমিতিতে।
২৯শে ফেব্রুয়ারি সকালে চ্যানেল আইয়ে শুরু হবে জন্মোত্সব। ওই দিন মামুনুর রশীদকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে। এ বইয়ে তাকে নিয়ে লিখেছেন মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় বিভিন্ন পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম দিনের আয়োজন।
দ্বিতীয় দিন সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে মামুনুর রশীদকে নিয়ে থাকছে বিশেষ সেমিনার। এতে প্রদর্শিত হবে তাকে নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র। বিকেলে মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে দেখা যাবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত ‘রাঢ়াং’ নাটকের দু’টি মঞ্চায়ন।
অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসানসহ আরণ্যক নাট্যদলের জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পীরা। তৃতীয় দিন ২রা মার্চ সকাল ১০টায় অ্যাকটরস ইক্যুইটির উদ্যোগে হবে আরেকটি সেমিনার। এতে প্রবন্ধ পাঠের পাশাপাশি তাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হবে, যেটি নির্মাণ করেছেন সুজাত শিমুল। এদিন বিকেলে মহিলা সমিতিতে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত ‘কহে ফেসবুক’ নাটকের মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনের আয়োজন।
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘জীবনে স্মৃতিচারণের সময় যেন না আসে। সবসময় যেন কিছু না কিছু কাজ করে যেতে পারি, সেটাই প্রত্যাশা করি। এই দেশ, সংস্কৃতি, গান মঞ্চ এর ভেতর দিয়েই তো একটা জীবন পার করে দিলাম। তাই সবাইকে নিয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে। জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো কিছু বলার নেই।’
আরো পড়ুন: নাতনিকে ডেটে যাওয়ার টিপস দিলেন জয়া বচ্চন
মামুনুর রশীদের জন্ম ১৯৪৮ সালে টাঙ্গাইলের কালীহাতিতে, মাতুলালয়ে। ছাত্রজীবন থেকেই মঞ্চনাটকের সঙ্গে সখ্যতা তার। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। দেশ স্বাধীনের পরপরই দেশে ফিরে গড়ে তোলেন ‘আরণ্যক’ নাট্যদল। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের মঞ্চ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন মামুনুর রশীদ। তার রচিত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক ‘ওরা কদম আলী’, ‘গন্ধর্ব নগরী’, ‘চে’র সাইকেল’, ‘সংক্রান্তি’, ‘রাঢ়াং’, ‘টার্গেট প্লাটুন’, ‘ইবলিশ’ প্রভৃতি। টিভির জন্যও অনেক নাটক লিখেছেন তিনি। মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রে এখনো নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন মামুনুর রশীদ।
এসি/