ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা জমিসংক্রান্ত মামলায় জয় পেয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
বুধবার (৩১শে জানুয়ারি) জমি বিবাদ মামলায় অমর্ত্য সেনের পক্ষে রায় দেন সিউড়ি জেলা আদালত।
একই সঙ্গে বিশ্বভারতীর নোটিশ খারিজ করে আদালত জানান, পুরো বিষয়টি পূর্ব-পরিকল্পিত ও অমর্ত্য সেনকে হেনস্তার উদ্দেশ্যেই এই মামলা করা হয়েছিল। এ বিষয়ে এখনো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিন সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিশে স্থগিতাদেশ দেন। অর্থাৎ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জমি খালি করাতে পারবে না। ১৬ই সেপ্টেম্বর মামলাটি ফের আদালতে উঠবে। ততদিন এই স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে। তবে মামলাটি উচ্চ আদালতে গড়াবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অর্মত্য সেন বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে আছেন- এমন অভিযোগ তুলে ‘এভিকশন অর্ডার’ বা উচ্ছেদের নির্দেশ সম্বলিত নোটিশ জারি করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মামলা গড়ায় আদালতে।
বুধবার (৩১শে জানুয়ারি) সেই নোটিশ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে সিউড়ি জেলা জজের এজলাসে যান অমর্ত্যের আইনজীবী। সেই মামলায় বিশ্বভারতীর ‘এভিকশন অর্ডার’কে বাতিল করে দিয়েছেন আদালত। এর ফলে কার্যত জমি মামলায় অমর্ত্য সেনের জয় হয়েছে বলে জানান, তার আইনজীবীরা।
অমর্ত্য সেনের আইনজীবী বিমান চৌধুরী বলেন, আদালত বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। গোটা ঘটনাটি পরিকল্পনা মাফিক সাজানো ও পক্ষপাতমূলক বলেও জানিয়েছেন আদালত।
আরেক আইনজীবী সৌমেন্দ্র রায় চৌধুরী বলেন, আদালত আপাতত বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। বিশ্বভারতীর দাবি আর টিকলো না। বিচারক রায়ে বলেছেন, বিশ্বভারতীর ‘এভিকশন অর্ডার’ পুরোপুরি প্রতিহিংসাপরায়ণ।
আরও পড়ুন: কলকাতার বইমেলায় বিশেষ সম্মানে ভূষিত বাংলাদেশ
অমর্ত্য সেনের বোলপুরের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সীমানা লাগোয়া জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশ্বভারতীর দাবি, সেখানে মোট ১ দশমিক ২৫ একর জমি লিজে দেওয়া হয় অমর্ত্যের প্রয়াত বাবা আশুতোষ সেনকে। কিন্তু অমর্ত্য সেন অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি ‘জবরদখল’ করে রেখেছেন।
এদিকে, রাজ্য সরকার জানিয়েছিল ১ দশমিক ৩৮ একর পরিমাণ জমিরই মিউটেশন রয়েছে অমর্ত্য সেনের নামে। এই নিয়ে তাকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বিশ্বভারতীকে কড়া বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি।
মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন, ওরা (বিশ্বভারতী) যদি অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙার চেষ্টাও করে, আমি সেখানে গিয়ে বসে পড়বো। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী অমর্ত্য সেনের বোলপুরের বাড়িতেও গিয়েছিলেন ও পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এসেছিলেন।
মামলাটি আদালতে গড়ানোর পর নানা মহল থেকে একাধিক বক্তব্য উঠে আসছিল। কলকাতা হাইকোর্ট বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ও মামলাটি নিম্ন আদালতকে শোনার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই আদেশ অনুযায়ী মামলাটি সিউড়ি জেলা আদালতেই চলছিল।
সূত্র: আনন্দবাজার
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন