ছবি: সংগৃহীত
গত ১৭ই জুন ঈদের দিন ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে মে মাসের শেষ দিকে রোকসানা আক্তার (৩০) নামে এক নারী কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ছোটভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের বাসায় বেড়াতে যান। পরে ১লা জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে ভাইয়ের বাসা থেকে তিনি বের হয়ে যান। এরপর দীর্ঘদিন খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ঈদের দিন বিকেলে ফেনী শহরে অবস্থানরত নিখোঁজ রোকসানার খালাতো বোন হাজেরা ও ভাই শাহজাহান খবর পান ড্রেন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা রোকসানার বড় ভাই এবায়দুল হককে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে এবায়দুল মরদেহ উদ্ধারকারী উপপরিদর্শক প্রতুল দাসের সঙ্গে দেখা করে রোকসানার ছবি দেখান। পরে রোকসানা পরিচয়ে মরদেহ শনাক্ত করে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। পরদিন ১৮ই জুন নিজ গ্রামে মরদেহটি দাফন করা হয়।
দাফনের ৯ দিন পর বুধবার (২৬শে জুন) বাড়িতে হাজির হন রোকসানা। তার উপস্থিতিতে সবাই আঁতকে উঠেন। এ ঘটনাটি উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামে ঘটেছে। এ নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ফিরে আসা নারীকে দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন। রোকসানা ওই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে।
রোকসানা বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামের ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় চলে আসি। সেখানে আমি একটি চাকরি পেয়েছিলাম। ২৬শে জুন বাড়িতে আসলে আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে দেখে অবাক হন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং মরদেহ দাফন করা হয়েছে। কিন্তু আমি তো জীবিত আছি।’
আরো পড়ুন: প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল চালুর ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
রোকসানার ভাই এবায়দুল হক বলেন, ‘রোকসানা জানিয়েছে সে নাকি ঢাকায় ছিল। সে মাঝে মাঝে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ হওয়াতে সে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। এদিকে খালাতো ভাই-বোনের সংবাদ পেয়ে ছবিতে কিছুটা মিল থাকায় বোনের মরদেহ মনে করে একজনের দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু রোকসানা জীবিত বাড়ি আসলে ফেনী মডেল থানার পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।’
প্রতিবেশী আলী আজম বলেন, ‘রোকসানা মানসিকভাবে অসুস্থ। তাকে আমরা ডাক্তারের কাছেও নিয়ে গেছিলাম। সে সুস্থ হয়নি, অসুস্থতার কারণে মাঝে মাঝে সে এমনটি করে।’
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঈদের দিন এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় খবর আসে মরদেহের স্বজনদের খোঁজ পাওয়া গেছে। পরে তার ভাই এসে পরিচয় শনাক্ত করলে আইনি কার্যক্রম শেষে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা মরদেহ নিয়ে গিয়েছিল তারা এসে জানান, ‘নিখোঁজ বোন জীবিত ফিরে এসেছে। এখন দাফন হওয়া নারীর পরিচয় শনাক্তে আমরা কার্যক্রম শুরু করব।’
এসি/