রবিবার, ১২ই জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে ঢাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, ১২ই জানুয়ারী ২০২৫

#

নতুন খ্রিষ্ট্রীয় বছরে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিছুটা ভালো হতে পারে। গড়াতে পারে উন্নতির দিকে। দুটি দেশই নিজ স্বার্থে নিজেদের মধ্যে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্কে গতি আনতে উদ্যোগী হয়েছে। ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে ‘ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ’ বজায় রাখতে পদক্ষেপ নিচ্ছে দুটি দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুই দেশের সরকারের শীর্ষপর্যায়ের কর্তা ব্যক্তিদের  বক্তব্য, বিবৃতি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ বিশ্লেষণ করে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেছেন।

তাদের মতে, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে পরস্পরের স্বার্থে কূটনৈতিক সুসম্পর্ক রেখে চলার দরকার আছে, এই উপলব্ধি ভারতের সাউথব্লকের মধ্যে বাংলাদেশ প্রশ্নে চলতি বছরের শুরু থেকে দেখা যাচ্ছে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের  উপদেষ্টাদের বক্তব্যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যে ধরনের বার্তা আসছে, সেগুলোকে ভারত বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে বলে বলে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র সুখবর ডটকমকে জানিয়েছে। তবে এই কূটনৈতিক সম্পর্ক আওয়ামী লীগের সরকারের আমলের মতো ‘বহুমাত্রিক ও বহুমুখী’ হওয়ার বদলে ‘কিছু শর্ত সাপেক্ষে’ আপাতত ভালো ‘ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ’ হতে পারে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালোর দিকে যাচ্ছে। দুই দেশই সম্পর্ক স্বাভাবিক চায়। কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, ভারতের সম্পর্ক হবে বাংলাদেশের সঙ্গে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়নের সুখবর রয়েছে। আমরা চাই, কোনো দলের সঙ্গে নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হবে। আর এ সম্পর্ক এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে।’

অন্যদিকে গত ৩রা জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল দেশটির সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের পর সংবাদ বিবৃতির আকারে এই মনোভাব স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়তে চাই। যা হতে হবে পারস্পরিক আস্থা, মর্যাদা, স্বার্থ ও একে অপরের উদ্বেগগুলো নিয়ে সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে।’

যোগাযোগ করলে বিশিষ্ট কূটনীতিক ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর এ প্রসঙ্গে সুখবর ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের  মধ্যে যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধান করতে হবে কূটনৈতিকভাবেই। দুই দেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বর্তমানের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তার আলোকে। আর ভারতের নীতিনির্ধারকদের উপলব্ধি করতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ আসলে কী চায়।’

পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, নতুন খ্রিষ্ট্রীয় বছরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকেও গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসে দ্বিপাক্ষিক সফরে চীনে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আগামী ২০ থেকে ২৪শে জানুয়ারি পাঁচদিনের চীন সফরে যাচ্ছেন তিনি। সেখানে তিনি চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সম্প্রতি জানিয়েছেন, ‘ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র- সবার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই তিন দেশের সঙ্গেই আমাদের স্বার্থ আছে, এই তিন দেশই আমাদের অগ্রাধিকারে থাকবে। নতুন বছরে আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে, এই তিন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ও ভালো অবস্থা সৃষ্টি করা।’

শান্তনু/ আই.কে.জে/

নয়াদিল্লি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন