ছবি: সংগৃহীত
অনেকে কৈশোরেই রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান, কিন্তু পরে আর সে সাফল্য ধরে রাখতে পারেন না। তেমনই একজন সোনম খান। কৈশোরে বলিউডে পা রেখেই পেয়েছিলেন অল্প সময়ে ব্যাপক সাফল্য। মাধুরী দীক্ষিত ও শ্রীদেবীর মতো তারকাদের সমকক্ষ হয়ে ওঠেন, পাশাপাশি কাজ করেছেন অমিতাভ বচ্চন, ঋষি কাপুর, নাসিরুদ্দিন শাহদের মতো তারকাদের সঙ্গে।
অথচ খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছেই হঠাৎ নেওয়া এক সিদ্ধান্ত আমূল বদলে দিল তার জীবন। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম, বলিউড লাইফ।
বখতাওয়ার খানের নাম পাল্টে দিলেন নির্মাতা যশ চোপড়া। তার বিশ্বাস ছিল, ‘সোনম’ নামটি নায়িকার ভাগ্য বদলে দেবে। ঠিক তাই হলো। অল্পদিনের মধ্যেই সোনম আলোচনায় আসতে শুরু করলেন।
১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় সোনমের প্রথম ছবি ‘বিজয়’। ছবিতে তার সহশিল্পী ছিলেন অনিল কাপুর, ঋষি কাপুর, হেমা মালিনী, অনুপম খেরের মতো তারকা। ছবিটি বক্স অফিসে সফল হয়। আর সোনমের স্টাইল ও সাহসী অভিনয়ে সাড়া ফেলে।
অভিষেক ছবিতেই সোনম একাধিক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেন। সেই সময় এমন সাহসী পদক্ষেপ খুব একটা দেখা যেত না। তাই তিনি রাতারাতি আলোচনায় চলে আসেন। দর্শক তাকে নতুনভাবে দেখতে শুরু করল।
১৯৮৯ সালের ‘ত্রিদেব’ সোনমকে এনে দেয় তারকাখ্যাতি। মাধুরী দীক্ষিত, নাসিরুদ্দিন শাহ, জ্যাকি শ্রফ, সঙ্গীতা বিজলানির মতো তারকাদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি নিজের জায়গা পাকা করে নেন। বিশেষ করে ‘ওয়ে ওয়ে’ গানটি সুপারহিট হয়, আর সোনমের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া হয়ে ওঠে।
চাঙ্কি পান্ডের বিপরীতে ‘মাটি অউর সোনা’ ছবিতে অভিনয় করেন সোনম। ছবিটি সাহসী দৃশ্যের জন্য তুমুল আলোচিত হয়। পরে এক সাক্ষাৎকারে সোনম স্বীকার করেন, এ ধরনের দৃশ্যে অভিনয়ে শুরুতে তিনি অনীহা প্রকাশ করেছিলেন।
সবচেয়ে বিস্ময়কর কাহিনি শোনান সোনম নিজেই। ‘মাটি অউর সোনা’ ছবির একটি নগ্ন দৃশ্য করতে রাজি ছিলেন না তিনি। তখন ছবির পরিচালক তার খালাকে সেটে ডাকেন। খালা সোনমকে বোঝান, এ দৃশ্য করলে তিনি একটি চকলেট পুরস্কার পাবেন! সেই শিশুসুলভ লোভেই নায়িকা রাজি হয়ে যান।
আজও ভক্তরা এই গল্পে বিস্মিত হন—মাত্র একটি চকলেটের জন্য এক কিশোরী নায়িকা সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন। তবে এটিই তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। কয়েক বছরের মধ্যে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের আলোচিত মুখ, সাহসী চরিত্রের প্রতীক।
মাত্র ১৮ বছর বয়সেই সোনম বিয়ে করেন নিজের থেকে দ্বিগুণ বয়সী পরিচালক রাজীব রাইকে। রাজীব ছিলেন বিখ্যাত প্রযোজক গুলশান রাইয়ের ছেলে, যিনি ‘দেওয়ার’, ‘মোহরা’র মতো ছবি উপহার দিয়েছেন বলিউডকে। বিয়ের পর সোনম ধর্ম পরিবর্তন করেন এবং সিনেমার জগৎ থেকে সরে দাঁড়ান।
কিছুদিন পরই সম্পর্কে ফাটল দেখা দিল। শোনা যায়, রাজীব রাই আন্ডারওয়ার্ল্ড, বিশেষ করে আবু সালেমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এ ভয়েই তারা মুম্বাই ছেড়ে বিদেশে চলে যান। তবে সোনম বিদেশে স্থায়ী হতে চাননি। তিনি ছেলেকে নিয়ে মুম্বাই ফিরে আসেন এবং একাই ছেলেকে মানুষ করেন। ছয় বছরের মাথায় ভেঙে যায় তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক।
অনেক বছর পর, ২০১৭ সালে আবার বিয়ে করেন সোনম। বর মুরালি নামের এক ব্যক্তি। তিনি সিনেমা–দুনিয়ার কেউ নন। তখন সোনমের ছেলে গৌরবের বয়স ২৫। মজার ব্যাপার, দ্বিতীয় বিয়ের খবরটি সোনম প্রকাশ করেন আরও আট বছর পর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন