ছবি: সংগৃহীত
টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতোমধ্যে মন্ত্রীদের মধ্যে দফতরও বণ্টন করেছেন তিনি। মন্ত্রিসভায় পুরনো অনেক মুখ যেমন রয়েছে তেমনি এসেছে বেশ কিছু নতুন মুখও। এবার জোট সরকার করায় শরিকদের জন্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর ১১টি পদ ছাড়তে হয়েছে বিজেপিকে।
নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে রেখেছেন কর্মিবর্গ, জনঅভিযোগ, পেনশন, পারমাণবিক শক্তি, মহাকাশ বিভাগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। মন্ত্রিসভায় প্রধান বেশ কিছু পদে পুরনো মুখই রাখা হয়েছে। মোদির ডান হাত হিসেবে পরিচিত অমিত শাহ এবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদেই রয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েও পুরনো মুখ রাজনাথ সিং-ই থাকছেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে এস জয়শঙ্কর এবং অর্থ মন্ত্রণালয় পদে নির্মলা সীতারমণের ওপর এবারও আস্থা রেখেছেন মোদি।
জোট শরিকদের মধ্যে জনশক্তি দলের (রাম বিলাস) প্রেসিডেন্ট চিরাগ পাসওয়ান পেয়েছেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসা চিরাগ পাসওয়ান (৪১) এবারই প্রথম ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
আরেক জোট শরিক বিহারের হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা-সেক্যুলার (এইচএম-এস) দলের প্রতিষ্ঠাতা জিতেন রাম মাঞ্জিকে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়েছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড) জেডি–ইউ নেতা রাজীব রঞ্জন সিংকে (লালন সিং) পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য, পশু পালন ও ডেইরি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়েছে।
বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাকে করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে এবারও নীতীন গড়করি। এবার এখানে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অজয় তামতা ও হর্ষ মালহোত্রা। কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন শিবরাজ সিং চৌহান। পর্যটন ও সংস্কৃতি দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন গাজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, অশ্বিনী বৈষ্ণ পেয়েছেন রেলওয়ে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী হয়েছেন কিনজারাপু রামমোহন নাইডু, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন অন্নপূর্ণা দেবী।
আরো পড়ুন: নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস
গৃহায়ণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মনোহর লাল খাট্টারকে, ভারী শিল্প এবং ইস্পাত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়েছে এইচ ডি কুমারাস্বামীকে, পীযূষ গয়াল হয়েছেন বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী, ধর্মেন্দ্র প্রধানকে করা হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী, সর্বানন্দ সোনোয়াল সামলাবেন বন্দর, জাহাজ ও নৌপথ মন্ত্রণালয়, সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীরেন্দ্র কুমারকে, প্রহ্লাদ যোশী পেয়েছেন খাদ্য এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন জুয়াল ওরাম।
গিরিরাজ সিং পেয়েছেন বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া পেয়েছেন টেলিকম মন্ত্রণালয় এবং উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, ভুপেন্দর যাদবকে করা হয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, কিরেন রিজিজুকে সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া হরদীপ সিং পুরি পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসমন্ত্রী, মানসুখ মান্দাভিয়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, জি কিষান রেড্ডি কয়লা মন্ত্রণালয় ও খনি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সি আর পাতিল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবার মোদির মন্ত্রিপরিষদে রয়েছেন দুইজন। এর মধ্যে আগের মন্ত্রিসভায় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এবারও তিনি একই মন্ত্রণালয় সামলাবেন। প্রথম বার কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েই জোড়া দায়িত্ব পেয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মদুমদার। তাকে শিক্ষা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এসি/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন