বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের স্বার্থে ও স্বার্থ সংরক্ষণ করেই ভারতের সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৩৪ অপরাহ্ন, ২৬শে জুন ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের স্বার্থে ও স্বার্থ সংরক্ষণ করেই ভারতের সাথে নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও পুরনো সমঝোতা স্মারক নবায়ন করেছে সরকার।

বুধবার (২৬শে জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে তিনি  এসব কথা বলেন।

তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে বিরোধ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, এটা তাদের রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিষয়, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা স্মারক করে বা চুক্তি করে। ঐকমত্য হয়, দ্বিমত হয়; সেটা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি মনে করি, এ প্রশ্নটা ভারত সরকারকে করলে ভালো হয়। তারাই এটার সঠিক উত্তর দিতে পারবে। কারণ, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

আরো পড়ুন: মতিউর রহমান সহ তার দুই স্ত্রী ও ৫ সন্তানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। ভারত সফরে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। মির্জা ফখরুলকে বলব, ভালোমতো পড়াশোনা করে গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দিতে। যে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়েছে, সবগুলো বাংলাদেশের স্বার্থে।

হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে পারেনি। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে ভারতের ভূমির ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে দ্বিপক্ষীয় সফরে আমন্ত্রণ জানায়। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় ভারত বাংলাদেশকে কত গুরুত্ব দেয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন না হলেও পানি পাবে বাংলাদেশ। তবে এই চুক্তি নবায়নের জন্য আমরা কথা বলেছি।

লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি খুনের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হত্যার বিষয়টি এখনই শুনলাম। দুই দেশই সীমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয়ে তৎপর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী’র সঙ্গে সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশে অবস্থানকালে রাষ্ট্রদূতের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূতও তার এ সময়কালকে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ ও ফলপ্রসূ বলে বর্ণনা করেন। 

বৈঠকে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, প্রযুক্তি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন তারা। 

বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী ইউরোপের দেশগুলোর অন্যতম সুইডেনের প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠান দেশে অপারেট করছে। কাপ্তাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১৯৬০ দশকের শুরু থেকে এবং সুইডিশ এনজিও সিডা বহুবছর ধরে এ দেশে কাজ করছে। আমরা তাদেরকে 'বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন' এবং তথ্যপ্রযুক্তিসহ নানা খাতে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছি।


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমন্বয় সভা

বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে 'সিনিয়র অফিশিয়ালস মিটিং'য়ে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 

মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরিচালিত সভায় কূটনৈতিক ও দাপ্তরিক বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী।  অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলাম ও সকল উইংয়ের মহাপরিচালকবৃন্দ সভায় অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রীর সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর উত্তর কার্যক্রম, চীনে আসন্ন দ্বিপাক্ষিক সফরের প্রস্তুতিসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের সাথে সুসমন্বয়, দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকি, প্রবাসী সেবার মানবৃদ্ধি, মিশনগুলোর ট্রেড টার্গেট বাস্তবায়ন ও কার্যক্রম ইনস্পেকটর জেনারেল অভ মিশনসে'র মাধ্যমে পরিদর্শনসহ মন্ত্রণালয় ও এর মিশনসমূহের নানা কার্যক্রমের ওপর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন মন্ত্রী ড. হাছান।

এইচআ/ 

ভারত সফর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

খবরটি শেয়ার করুন