ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বন দখল করে মানুষ গড়ে তুলছে ইমারত আর বন্যপ্রাণীরা অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে খাবারের সন্ধানে। বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থলে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেল মানুষের দখলদারত্ব কীভাবে বন্যপ্রাণীদের কোণঠাসা করে ফেলছে।
১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেছেন ভারতীয় বন কর্মকর্তা (আইএফএস) পারভিন কাসওয়ান। ভিডিওতে দেখা যায়, রাজস্থানের মাউন্ট আবুর কাছে একটি চিতা (লেপার্ড) খাবারের খোঁজে আবর্জনার স্তূপে ঘাঁটাঘাঁটি করছে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
প্রকৃতির সবচেয়ে ভয়ংকর ও দক্ষ শিকারিদের মধ্যে অন্যতম চিতাবাঘ। সতর্ক চলাফেরা, শক্তি এবং অভিযোজন ক্ষমতার জন্য পরিচিত এরা। কিন্তু ভিডিওটিতে এই বন্যপ্রাণীকে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে। আবর্জনার মাঝে মরিয়া হয়ে খুঁজছে খাবার। প্লাস্টিক, মাটি ও অন্যান্য আবর্জনা শুঁকে দেখছে খাওয়ার যোগ্য কি না।
ভিডিওটি শেয়ার করে বন কর্মকর্তা কাসওয়ান লিখেছেন, ‘কি দুঃখজনক দৃশ্য! শিবাংশ সাহ মাউন্ট আবুর কাছে এই চিতাবাঘের ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন। দেখুন, কীভাবে আমাদের আবর্জনা বন্য পরিবেশে পৌঁছাচ্ছে!’
কাসওয়ান আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা শুধরে যাই। বন রক্ষা করি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শিখি এবং বন্যপ্রাণীকে তাদের আবাসস্থল ফিরিয়ে দিই।’
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেকে আবর্জনা ফেলার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান এবং সরকারের কাছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
একজন মন্তব্য করেন, ‘খুবই দুঃখজনক। একটা বিষয় স্পষ্ট। আমরা নিজেরা সচেতন হব না, কঠোর জরিমানার মাধ্যমে আমাদের বাধ্য করতে হবে।’
আরেকজন লেখেন, ‘উন্নয়নের নামে তাদের বাসস্থান কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বন ধ্বংস করা হচ্ছে। পরিবেশের বিশাল ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু সরকারের যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।’
আরেক মন্তব্যকারী লেখেন, ‘আমি মাউন্ট আবুরই বাসিন্দা। এর আগে দুটি ভালুককে ডাম্পিং ইয়ার্ডে দেখা গিয়েছিল। আমি ভিডিও শেয়ার করেছিলাম। এখানে এখন গরু-মহিষ-ভালুক-চিতা সবাইকে একসঙ্গে দেখা যায়। নাম নিতে চাই না, কিন্তু কেউ কিছু করছে না। খুব খারাপ লাগে।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘খুবই দুঃখজনক, সত্যিই। আমরা যখন তাদের জমি দখল করি, তখন অসহায় প্রাণীদের আর কোনো উপায় থাকে না। মানুষের লোভের শেষ নেই।’
গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে চিতাবাঘের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৮৭৪টি। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এদের সংখ্যা বছরে গড়ে ১.০৮ শতাংশ হারে বেড়েছে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিতা রয়েছে মধ্যপ্রদেশে (৩ হাজার ৯০৭টি)। এরপর মহারাষ্ট্রে (১ হাজার ৯৮৫টি), কর্ণাটকে (১ হাজার ৮৭৯টি) এবং তামিলনাড়ুতে (১ হাজার ৭০টি)।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন