ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাত বন্ধের জন্য একদিকে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা, অন্যদিকে উপত্যকাটিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় নির্বিচার হামলা শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিন মঙ্গলবার (৭ই অক্টোবর) অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
মিসরের পর্যটন শহর শারম আল–শেখে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবারও ওই আলোচনা হওয়ার কথা। সোমবার আলোচনার শুরুটা ‘ইতিবাচক’ হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস। যদিও সংগঠনটির এক নেতা বলেছেন, এবারও আলোচনায় ‘বাধা দেওয়ার’ চেষ্টা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। খবর আল জাজিরার।
গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উপত্যকাটিতে ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এ নৃশংসতার মধ্যে গাজায় সংঘাত বন্ধে গত ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০ দফা ‘শান্তি’ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতমূলক বলছেন অনেক বিশ্লেষক।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওই পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে পরিকল্পনার কিছু শর্তের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে হামাসের। এসব নিয়ে আলোচনার জন্য গত সোমবার থেকে শারম আল–শেখে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার (৮ই অক্টোবর) এ আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানির। হামলার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জের প্রথম দিনের আলোচনা নিয়ে আল-জাজিরার সঙ্গে কথা বলেছে হামাস-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
তাদের ভাষ্যমতে, সোমবার দুই পক্ষের আলোচনা ‘ইতিবাচক’ হয়েছে। এই আলোচনা কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, তার একটি রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে এদিন। এ ছাড়া ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ বলে মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে হামাস।
মিসরের আলোচনার বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন— গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করবে না, এ নিশ্চয়তা তিনি কীভাবে দেবেন? জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের হাতে অনেক ক্ষমতা রয়েছে। আর সবাই যেন চুক্তি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভাব্য সবকিছু করব।’
তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘাত শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় পদক্ষেপ ছাড়া বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক সমাধান আসবে না বলে মনে করেন ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ–এর কলাম লেখক গিদেয়ন লেভি।
তিনি বলেন, সংঘাত বন্ধের আশা রয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যথেষ্ট দৃঢ়তা না দেখালে এর বেশি কিছু পাওয়া যাবে না। আর তিনি আদৌ দৃঢ়তা দেখাবেন কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিষয়ে আগ্রহী ট্রাম্প।’
খবরটি শেয়ার করুন