ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
গত চার দশকের বেশি সময় ধরে কোটি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এইচআইভি। তবে এর বিরুদ্ধে এবার হাতে এসেছে এক কার্যকর হাতিয়ার। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) বিশ্বের প্রথম এইচআইভি প্রতিরোধী ওষুধ ‘ইয়েজটুগো’ বা ‘লেনাক্যাপাভির’-এর অনুমোদন দিয়েছে, যা বছরে মাত্র দুইবার ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রায় শতভাগ (৯৯ দশমিক ৯৯) সুরক্ষা দিতে পারে। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিলিয়াড সায়েন্সেস ইতিমধ্যেই আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী ওষুধটি সাশ্রয়ী মূল্যে পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ছয়টি জেনেরিক ওষুধ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে রয়্যালটি-মুক্ত লাইসেন্স চুক্তি করেছে, যাতে এই ইনজেকশন স্বল্পমূল্যে উৎপাদন ও সরবরাহ করা যায়। খবর টাইম ম্যাগাজিনের।
এফডিএ অনুমোদিত ওষুধ ‘লেনাক্যাপাভির’, যেটি ‘ক্যাপসিড ইনহিবিটর’ নামে পরিচিত একটি নতুন শ্রেণির ওষুধ। এটি বর্তমানে বছরে গড়ে ১৩ লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটানো এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধে প্রায় ১০০ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত।
২০২৪ সালে, বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘সায়েন্স’ এই ওষুধকে ‘বছরের যুগান্তকারী আবিষ্কার’ হিসেবে ঘোষণা করে। তখন থেকেই ওষুধটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলেছে। এই প্রি-এক্সপোজার প্রোফিল্যাক্সিস (প্রিট) হলো একটি চিকিৎসা পদ্ধতি, যা এইচআইভি-নেগেটিভ অর্থাৎ ভাইরাসে আক্রান্ত নয় এমন ব্যক্তিদের সংক্রমণ থেকে প্রায় ৯৯ শতাংশ সুরক্ষা দেয়।
ওষুধটি কাজ করে এইচআইভি–১ ভাইরাসের ক্যাপসিড (capsid) প্রোটিন শেলকে লক্ষ্য করে, যা ভাইরাসের জিনগত উপাদানকে রক্ষা করে এবং এটি মানব কোষে প্রবেশ করায়। কোষে ঢোকার পর ক্যাপসিডটি খসে পড়ে এবং ভাইরাস বংশবৃদ্ধি শুরু করে। লেনাক্যাপাভির এই প্রক্রিয়াটি প্রতিরোধ করে।
গিলিয়াডের চেয়ারম্যান ও সিইও ড্যানিয়েল ও’ডে বলেন, ‘এইচআইভির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। ইয়েজটুগো আমাদের সময়ের অন্যতম বৈজ্ঞানিক সাফল্য এবং এটি এইচআইভি মহামারি শেষ করার বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি করেছে।’
খবরটি শেয়ার করুন