ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
মাত্র চারজন জনসংখ্যা নিয়ে একটি গ্রাম। এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা তিনজন। ঘটনাটি অবাক করার মতো হলেও সত্য। ব্যতিক্রমী এই গ্রামের সন্ধান মিলেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর রাজীবপুর ইউনিয়নে। গ্রামের নাম উমানাথপুর।
সাধারণত জনবসতিপূর্ণ এলাকা বা অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় গ্রাম। কিন্তু ব্যতিক্রম এই গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে ভূমি মানচিত্রেও। উমানাথপুর নামে রয়েছে আলাদা মৌজাও। তবে স্থানীয় গুটি কয়েক মানুষ এই গ্রামের অস্তিত্ব জানলেও বেশির ভাগ মানুষ জানেন না এই গ্রাম সম্পর্কে।
গ্রামটিতে রয়েছে একটি মাত্র বাড়ি, যেখানে বসবাস করে একটিমাত্র পরিবার। বাড়িটি দলিল লেখক সিরাজুল সরকারের (৭৫)। ২৫ শতক জমির ওপর নির্মিত এ বাড়িতে রয়েছে দুটি বসতঘর, একটি গোয়ালঘর, আছে একটি পুকুর ও একটি টয়লেট।
অন্যের জমির আইল দিয়ে এ বাড়িতে যেতে হয়। আর এ বাড়ি ঘিরেই গঠিত হয়েছে ‘উমানাথপুর’ গ্রাম। এ গ্রামের পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদ। আশপাশে গ্রামের মধ্যে রয়েছে- উত্তরে রামগোবিন্দপুর, দক্ষিণে হরিপুর, পূর্বে উদয়রামপুর এবং পশ্চিমে রামগোবিন্দপুর ও হরিপুর গ্রাম। সম্প্রতি এ গ্রামের একমাত্র বাড়ির কর্তা দলিল লেখক সিরাজুল সরকারের ছেলে শরীফুল আলমের মৃত্যু হয়েছে। এরপর এ গ্রামের কথা জানাজানি হয়।
পাশের রামগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল হক পারভেজ গণমাধ্যমকে বলেন, একটি বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম। কয়েক যুগ আগেই এ গ্রাম গড়ে উঠেছে। বাপ-দাদাদের আমল থেকেই আমরা এ গ্রামের অস্তিত্ব দেখে আসছি। জমির কাগজপত্রে এ গ্রামের অস্তিত্ব আছে। এ বাড়িতে আসার একমাত্র রাস্তাটা সংস্কার করে প্রশস্ত করে দিলে বাড়িতে থাকা মানুষদের চলাচলে অনেক সুবিধা হতো। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কাছে রাস্তাটি প্রশস্ত করার দাবি জানাই।
বাড়ির কর্তা সিরাজ সরকার (৭৫) গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বাবা সাবেক ইউপি সদস্য রমজান আলী সরকার ও তার পূর্বপুরুষরা এ বাড়িটি ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ গ্রামে মোট জমির পরিমাণ ছয়/সাত একর। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি পরিবার নিয়ে এ বাড়িতে বসবাস করি। আমাদের পরিবারের মোট সদস্য বর্তমানে চারজন। এর মধ্যে নাতি ছাড়া আমি, আমার স্ত্রী ও এক পুত্রবধূ ভোটার। এ গ্রামের জেএল নম্বর ১১৬। তবে আমার বোনেরা বসবাস করেন বাড়ির পেছনে অন্য গ্রামে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, উমানাথপুর গ্রামটি আমাদের ঈশ্বরগঞ্জের সম্পদ। আমরা ইতোমধ্যে গ্রামটি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। অতিদ্রুত গ্রামে ভালোভাবে যাতায়াত করার জন্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার উন্নয়নে কাজ করব।
ওআ/ আই.কে.জে