ছবি - সংগৃহীত
গত ১লা অক্টোবর থেকে দেশের সুপারশপগুলোতে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পলিথিনের জায়গা দখল করেছে কাগজের ঠোঙা। এছাড়া পরিবেশবান্ধব নানা ধরনের ব্যাগ রাখা হয়েছে। সুপারশপগুলোতে ক্রেতারা যাতে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারে উৎসাহী হোন সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক নানা বার্তা দেয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক লিফলেট। সুপারশপগুলো ন্যায্যমূল্যে পরিবেশবান্ধব পাট ও কাপড়ের ব্যাগ সরবরাহ করছে। আগামী ১লা নভেম্বর থেকে দেশের কাঁচাবাজারগুলোতেও পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার ২০০২ সালের ১লা মার্চ থেকে পলিথিন ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত করে তাহলে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা এমনকি উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। কিন্তু মাঝে মাঝে পলিথিন নিষিদ্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বিগত ২২ বছরে এই কার্যক্রম আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় পলিথিন ব্যবহার বন্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হয়।
বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার। পরিবেশবিদদের মতে, পলিথিন তৈরিতে ক্ষতিকর যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, তা পরিবেশের সুরক্ষায় মোটেও উপযোগী নয়। পলিথিন এমন একটি পণ্য যা মাটির সাথে মিশে না। অপচনশীল পদার্থ হওয়ায় এর অবশিষ্টাংশ মাটির অভ্যন্তরে ঢুকে উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে, মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। পলিথিনের কারণে বর্ষাকালে নগরীর পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেন, নালা-নর্দমা, খাল, বিলগুলো ভরাট হয়ে পানি দূষিত হচ্ছে। নদী ও সমুদ্রের তলদেশে পলিথিন জমা হয়ে জীববৈচিত্র্য ও সামুদ্রিক মাছের মারাত্মক ক্ষতি করছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, পলিথিন থেকে নির্গত হয় বিষাক্ত পদার্থ, যা মানবদেহের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। যার কারণে চর্মরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়ুজনিত রোগ ও ক্যানসারসহ জটিল রোগ হতে পারে।
পলিথিন নিষিদ্ধ করা গেলে এটা সরকারের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজ হবে। এটি করা গেলে পাটের ব্যাগের প্রচলন বেড়ে যাবে। আর চাহিদা বেড়ে গেলে পাট চাষও বেড়ে যাবে। দেশে আবারও পাটের সেই সোনালী দিন ফিরে আসবে।
আই.কে.জে/