এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেসার তানজিম হাসান সাকিবের।
এশিয়া কাপের মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দারুণ পারফর্ম করেছেন। ক্রিকেটীয় নৈপুণ্যে ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাই প্রত্যাশিতভাবেই সমর্থকদের প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তরুণ এই পেসার। কিন্তু মাঠে দুর্দান্ত পারফর্ম করা তানজিম সাকিব পুরানো ফেসবুক পোস্টের জেরে পড়েছেন সমালোচনার মুখে। এবার দিয়েছেন সেই সমালোচনার জবাব।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে সুপার ফোরের ম্যাচে কলম্বোয় মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচটিতে ৬ রানে জয় পায় লাল-সবুজের দল। যেখানে শেষদিকে ব্যাট হাতে নেমে ৮ বল খেলে এক চার ও এক ছক্কার সাহায্যে ১৪ রান করেন তানজিম সাকিব। আর বল হাতে ৭.৫ ওভারে ১টি মেডেন ও ৩২ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন দুটি উইকেট। সেখানে ভারতের দলপতি ও অন্যতম ভরসার নাম রোহিত শর্মার উইকেটও রয়েছে। রয়েছে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান তিলক ভার্মার উইকেটও।
তবে এই ম্যাচের পরেই নেটিজেনদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তানজিম সাকিব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কয়েকটি স্ট্যাটাসে নজর পড়ে নেটিজেনদের। সেগুলোতে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলার অভিযোগ ওঠে।
এরপরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তানজিম সাকিব বলেন, মৃত্যুকে সকলেরই মোকাবিলা করা লাগবে। কখন কে মারা যাবে, কেউ কিছু জানে না। আমি পরকালে সফল হতে না পারলে তো শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই থেকে যাব। সুতরাং সেই হিসেব করে আমি ইসলামকে মেনে চলার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি সবসময় ইসলামের মধ্যে থাকার জন্য। আর এই জিনিসটি আমাকে খেলার মধ্যেও অনেক সাহায্য করে।
বাংলাদেশের তরুণ এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ইসলাম আমাকে শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে সাহায্য করে। তাতে মানসিকভাবে আমি শক্ত থাকতে পারি। আমার মানসিকতা অন্যদিকে যায় না। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের মানসিকতা ধরে রাখতে পারি। সুতরাং এটি আমাকে দুনিয়া এবং আখিরাত- দুইদিক থেকেই সাহায্য করছে।
প্রসঙ্গত তানজিম সাকিবের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে থাকা ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বরের একটি লেখা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সে পোস্টে লেখা ছিল, স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়। স্ত্রীকে যেই স্বামী বলে- আমার স্ত্রীর চাকরি করার দরকার নেই। আমি যা পাই তোমাকে খাওয়াব, সে তাকে রাজরানি করে রাখবেন। এখন সে রাজরানি না হয়ে কর্মচারী হতে চায়।
তানজিম সাকিবের ফেসবুক পোস্টে আরও লেখা ছিল, আসলে স্ত্রী স্বামীর মর্যাদা বোঝেনি, স্ত্রী নিজের মর্যাদাও বোঝেনি। ঘর একটি জগৎ। অসংখ্য কাজ রয়েছে। আজ ছেলেদের বেকারত্বের বড় কারণ হচ্ছে- মেয়েরা এগিয়ে আসছে, ছেলেরা কোনো চাকরি পাচ্ছে না। একটি ছেলেকে চাকরি দিলে পুরো পরিবারের উপকার হয়।
পোস্টের শেষে বলা হয়েছিল, (অতএব মা-বোনেরা নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে স্বামীর আনুগত্য ও বাসায় অবস্থান করে রানির হালাতে অবস্থান করুন। অতএব মা-বোনেরা দুনিয়া কামাতে যেয়ে আখেরাত না হারিয়ে ঘরে অবস্থান করে স্বামী-সন্তানের খেদমত করে দুনিয়া ও আখেরাত দুটিই কামাই করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া পোস্টের শেষে একটি মাইক্রোফোনের ইমোটিকনসহ শায়খ আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ) নামটি লেখা ছিল।
তবে তানজিম সাকিবের সেই পোস্ট এই মুহূর্তে ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এসকে/