সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউনূসের বিচার স্থগিতের দাবির প্রতিবাদে ১৭১ নাগরিকের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি : সংগৃহীত

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের লেখা খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ১৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিদাতাদের মতে, এই চিঠি দেশের সার্বভৌমত্ব ও বিচার বিভাগের ওপর হুমকি। এই ‘অযাচিত হস্তক্ষেপে’ উদ্বেগ জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খোলাচিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত চলমান মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’

খোলা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু আইনি ও নৈতিক প্রশ্ন সামনে চলে আসে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৪(৪) অনুযায়ী বিচারকরা তাদের বিচারিক কাজে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত কারও বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই। উল্লিখিত চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) স্বীকৃত শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এই চিঠিতে ‘নিরপেক্ষ’ বিচারকের মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিচারের যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে হেয় করার সামিল বলে আমরা মনে করি।

সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকই আইনের দৃষ্টিতে সমান উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানে সবারই আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারকাজও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ও স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ‘বিচারিক হেনস্তা’র অভিযোগ অমূলক ও অনভিপ্রেত। পাশাপাশি ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে সবসময়ই দেশ-বিদেশে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান, নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী, সমাজবিজ্ঞানী ও লেখক অধ্যাপক বুলবন ওসমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, এশিয়াটিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, কবি নির্মলেন্দু গুণ, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. বজলুল হক খন্দকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস, সাবেক বিচারপতি মমতাজউদ্দীন আহমেদ, এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ আলী জহির, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম মনোয়ার উদ্দিন আহমদ, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, মানবাধিকার কর্মী অ্যারমা দত্ত, নারীনেত্রী রোকেয়া কবীর, কবি ও লেখক নূহ আলম লেনিন, সাংবাদিক হারুন হাবীব, প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. শামীম বসুনিয়া, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, অভিনেত্রী লাকী ইনাম, কার্টুনিস্ট শিশির ভট্টাচার্য, চলচ্চিত্রকার মানজারে হাসিন মুরাদ, নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, নাট্যজন ম. হামিদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি মফিদুল হক, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নাঈমুল ইসলাম খান, মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্ত, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দীন ফকির, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন, লেখক শাহরিয়ার কবির, কবি তারিক সুজাত, কবি অসীম সাহা, নাট্যজন পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, কবি ও চিকিৎসক হারিছুল হক প্রমুখ।

আই.কে.জে/

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন