শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কানাডায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে খালিস্তান চরমপন্থীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:০৪ অপরাহ্ন, ১০ই জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

কানাডার অলিগলিতে বিভিন্ন সহিংস পোস্টার দেশের নানা সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিঘ্নিত করছে। সন্ত্রাসবাদীরা ক্রমে ক্রমে কানাডাকে যুদ্ধের ময়দান হিসেবে গড়ে তুলছে।

মূলত খালিস্তান বিচ্ছিন্নতাবাদী চরমপন্থীরা কানাডার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে সেখানে বিভক্তি ঘটাতে চাইছে।

গ্রেটার টরন্টো এরিয়া (জিটিএ) এর একটি মন্দিরে সম্প্রতি কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে অপ্রীতিকর পোস্টার লাগানো হয়। পূর্বে ভারত বিরোধী কার্যক্রম অনলাইনে চললেও এই প্রথম জনসম্মুখে এই কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী দল শিখস ফর জাস্টিস। তাছাড়া এ অপ্রীতিকর ঘটনার দ্বারা তারা মন্দিরের পবিত্রতাও ভঙ্গ করে।

কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার এবং রাষ্ট্রদূতের ছবি সম্বলিত পোস্টারে তাদেরকে শহীদ নিজ্জারের হত্যাকারী হিসেবে দাবি করা হয়। পোস্টারটি ভারত মাতা মন্দিরের বাইরে লাগানো হয়।

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইন্দো-কানাডিয়ানরা টরন্টোতে ভারতীয় কনস্যুলেটে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিকল্পনা করে। এটি ছিল খালিস্তান স্বাধীনতা সমাবেশের বিরুদ্ধে একটি পালটা আন্দোলন। 

মিছিলে অংশগ্রহণকারী টরন্টোর বাসিন্দা বীরেন্দ্র সিং বলেন, এধরনের কার্যক্রমে তারা উদ্বিগ্ন। কানাডিয়ান মূল্যবোধ কখনোই ভারতীয় কূটনীতিকদের হুমকি প্রদানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

এ পরিস্থিতিতে কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে একটি গুরুতর প্রশ্নও উত্থাপিত হয়। কানাডায় ভিন্নমতাবলম্বীদের সম্মান প্রদর্শন করা হলেও এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খালিস্তানপন্থীরা দেশের শান্তি নষ্ট করছে। এ পরিস্থিতিতেও কানাডা কর্তৃপক্ষ চুপ করে আছেন কোন প্রেক্ষিতে? 

অনেকের ধারণা কানাডা সরকার এদের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ হয়ে রয়েছেন এর প্রধান কারণ হল খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নবাদীদের বেশিরভাগই টরন্টো, ব্রিটিশ কলম্বিয়া এবং অন্টারিওর মতো প্রধান নির্বাচনী এলাকায় বাস করে।

যুক্তরাজ্য ও কানাডার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় বিপুল পরিমাণ শিখ সম্প্রদায় বসবাস করে। তাই তারা রাজনীতিবিদদের জন্য একটি বিরাট ভোট ব্যাংক।

খালিস্তান চরমপন্থী কার্যকলাপের ক্রমবর্ধমান ঢেউ শুধু ভারতকেই নয়, কানাডিয়ান সমাজকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত করে এবং কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিয়ে তারা কানাডার শান্তি ও ঐক্য ভঙ্গ করছে।

তবে এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে কানাডা ও যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ মানুষই এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করছে না। লন্ডনে আয়োজিত খালিস্তান ফ্রিডম র‍্যালিতে মাত্র ৩০ জন অংশ নিয়েছিল। একইভাবে কানাডাতেও অল্প সংখ্যক মানুষ এই বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করছে।

আরো পড়ুন: পাকিস্তানি নারীর ফাঁদে ভারতীয় বিজ্ঞানী, হাতিয়ে নিল মিসাইলের তথ্য

তাই এটা স্পষ্ট যে, খালিস্তান আন্দোলনে শিখ সম্প্রদায়ের বৃহত্তর অংশই অন্তর্ভুক্ত নয়। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য হলো বিতর্ক সৃষ্টি করা এবং বিভেদকে উস্কে দেওয়া।

এই ধরনের চরমপন্থার বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান নেওয়ার সময় এসেছে। কারণ এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বর্তমানে কানাডার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে দিয়ে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভেদের দেয়াল তৈরি করতে চাইছে।

এম এইচ ডি/

খালিস্তান বিচ্ছিন্নতাবাদী চরমপন্থী কানাডা শান্তি শিখ সম্প্রদায়

খবরটি শেয়ার করুন