ছবি : সংগৃহীত
দুর্নীতি বন্ধে সরকারি সব কেনাকাটায় বাধ্যতামূলক হচ্ছে ইজিপি টেন্ডার। ‘সরকারি ক্রয় বাতায়ন’ থেকে এখন সরকারি ক্রয়ের বিভিন্ন দিক জানতে পারছেন নাগরিকরা। কোথায় কী ধরনের উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, কোন কোন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে বা হবে, কত টাকার ক্রয় চুক্তি হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, সরকারি ক্রয়ের প্রধান সূচকগুলোর (কেপিআই) অবস্থা কী এ ধরনের নানা তথ্য দেখার সুযোগ রয়েছে এতে।সরকারি ক্রয় বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন তৈরিতে সাংবাদিকদের জন্য তথ্য-উপাত্তের বড় একটি উৎস হতে পারে সরকারি ক্রয় বাতায়ন।
বৃহস্পতিবার (২৮শে ডিসেম্বর) ‘সরকারি ক্রয়ে নাগরিক সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন: দেশে এলো ১২০ টন পেঁয়াজ
সরকারি ক্রয় বাতায়ন উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বিপিপিএর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিনেটের ব্যবস্থাপনায় এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্টের (ডাইম্যাপ) প্রকল্পের আওতায় বিপিপিএ ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ২০১১ থেকে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ই-জিপির মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যা ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪৬৪টি। এসব দরপত্রের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৮ লাখ ৫২১ কোটি টাকা। ই-জিপি সিস্টেম থেকে এ পর্যন্ত আয় ২৩৫৪ কোটি টাকা। ই-জিপিতে এ পর্যন্ত নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ১৭৮ জন। দেশের ৫২টি ব্যাংকে ই-জিপি সিস্টেমে যুক্ত রয়েছে। সারাদেশে এসব ব্যাংকের ৬৯৯০টি শাখা দরদাতাদের পেমেন্ট সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, সরকারের লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবছর উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে সরকারি ক্রয়ে ব্যয়ের পরিমাণ। বর্তমানে জাতীয় বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮০ শতাংশই ব্যয় হচ্ছে সরকারি ক্রয়ে। বড় অঙ্কের এই ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে নাগরিক সম্পৃক্ততা। নাগরিকদের এ সম্পর্কিত তথ্য জানাতে ‘সরকারি ক্রয় বাতায়ন’ নামে সিটিজেন পোর্টাল চালু করেছে বিপিপিএ (পূর্বতন সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট-সিপিটিইউ)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, সাংবাদিকরাও সরকারি ক্রয়ের অংশীজন। তারা তাদের লেখনীর মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। সরকারি ক্রয় বাতায়নের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সরকারি ক্রয়বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরিতে সাংবাদিকের জন্য সহায়ক হবে। এটি সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত তথ্যের বড় একটি উৎস। তথ্য প্রদানের জন্যই এই সিটিজেন পোর্টাল চালু করা হয়েছে। বিশ্বের খুব কম সংখ্যক দেশেই ক্রয়বিষয়ক এ ধরনের সিটিজেন পোর্টাল আছে।
বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় ও গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থায় যুগান্তকারী নানা সংস্কার হয়েছে। এসব সংস্কার সারা বিশ্বেই প্রশংসিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ থেকে এসব বিষয়ে জানতে বিপিপিএ (পূর্বতন সিপিটিইউ) পরিদর্শন করেছে।
তিনি বলেন, নাগরিকদের করের টাকায় ও তাদের জন্যই সরকারি ক্রয়। এই অর্থ কীভাবে ব্যয় হচ্ছে তা জানার অধিকার রয়েছে প্রতিটি নাগরিকের। গোপনীয় ও স্পর্শকতার কিছু তথ্য ছাড়া ধীরে ধীরে সরকারি ক্রয়ের সব তথ্যই সরকারি ক্রয় বাতায়নে দেওয়া হবে। আগামীতে এ পোর্টালের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় বিষয়ে নাগরিকদের মতামত নেওয়ার উদ্যোগও থাকবে। এর ফলে দেশের সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা আরও বেশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হবে।
এইচআ/ আই.কে.জে/