ছবি : সংগৃহীত
ক্ষমা, কখনও এটি করার থেকে বলা অনেক সহজ। আপনি মনে করেন যে আপনার সঙ্গে কোনোভাবে অন্যায় করা হয়েছে; কীভাবে আপনি এর শোধ তুলতে পারেন বারবার আপনার মাথায় সেই চিন্তাই খেলে। আপনি এর থেকে বের হতে পারেন না। এই নেতিবাচক আবেগ আপনার ভেতরে ভালোভাবে চলতে থাকে। কিন্তু রাগ বা বিরক্তি ধরে রাখা আপনার জন্য ভালো নয়। শারীরিক, মানসিক বা আবেগগতভাবেই আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন যদি ক্ষমা না করে রাগ পুষে রাখেন।
ক্ষমা একটি শক্তিশালী এবং মহৎ কাজ। যিনি ক্ষমা করে দিলেন এবং যাকে ক্ষমা করা হলো উভয়েই অনেক সুবিধা পেতে পারেন। আপনি যাকে ক্ষমা করতে পারছেন তার প্রতি আরেকটু সহানুভূতিশীল হয়ে ভাবতে পারেন। প্রতিশোধ স্পৃহা ভুলে গিয়ে তাকে ক্ষমা করে গেলে আপনিও লাভবান হবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন ক্ষমা করা গুরুত্বপূর্ণ
১. মানসিক প্রশান্তি দেয়
ক্ষোভ ধরে রাখলে বা রাগ করে থাকলে তা বিরক্তি বা তিক্ততার অনুভূতিগুলো বাড়িয়ে তোলে। যা আমাদের মানসিক সুস্থতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ক্ষমা করার মাধ্যমে আমরা অপরাধের সাথে যুক্ত নেতিবাচক আবেগ থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পারি। এটি আমাদের বেদনা, আঘাত এবং নেতিবাচকতাকে দূরে সরাতে সাহায্য করে। ফলে মানসিক নিরাময় এবং অভ্যন্তরীণ শান্তির অনুভূতি বৃদ্ধি পায়। ক্ষমা আমাদের বাড়তি বোঝা বহন করার ঝামেলা থেকে মুক্ত করে, আমাদেরকে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন : যে লাইফ স্কিলগুলো আপনার সন্তানকে অবশ্যই শেখাতে হবে
২. সম্পর্ক রক্ষা করে
ক্ষমার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্ক সারিয়ে তোলা এবং রক্ষা করার সম্ভাবনা থাকে। যখন আমরা কাউকে ক্ষমা করি তখন পুনর্মিলনের দরজা খুলে দিই, বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি করি। এটি আমাদের মধ্যে সহানুভূতি, সমবেদনা এবং আরো ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। ক্ষমা পরিপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করে। ক্ষমা করলে হৃদ্যতা বাড়ে, ভাঙা সম্পর্ক আবার জোড়া লাগে। তাই ক্ষমা করলে কেবল যাকে ক্ষমা করলেন সেই নয়, আপনিও লাভবান হবেন।
৩. ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি
ক্ষমা একটি সাহসী কাজ যার জন্য শক্তি এবং মানসিক স্থিরতা প্রয়োজন। ক্ষমা করার মানে হলো অন্যের কর্ম দ্বারা নিজের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না দেওয়া। বরং নিজের আবেগ এবং প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার নামই ক্ষমা। এটি আমাদেরকে নেতিবাচক অনুভূতি থেকে মুক্ত হওয়ার এবং মানসিক শক্তি অর্জন করার ক্ষমতা দেয়। ক্ষমা সহানুভূতি, সমবেদনা এবং বোঝাপড়া বাড়িয়ে দেয়। এটি আমাদের আরো বেশি আত্ম-সচেতনতা এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক লালন করার ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করে।