সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছিটমহল বিনিময়

নোবেলদাতাদের চোখে ছানি না থাকলে হাসিনা-মোদি শান্তিতে নোবেল পেতেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৭:০২ অপরাহ্ন, ১লা আগস্ট ২০২৩

#

‘কুড়িগ্রামে ছিটমহল বিনিময়: ঐতিহাসিক মানবিক অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভা মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রাম কলেজ মোড়ে শেখ রাসেল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সোসাইটি ফর কালচারাল এন্ড সোশ্যাল স্টাডিজ, বেসরকারি সংগঠন উদ্দীপন ও উত্তরবঙ্গ জাদুঘর সেমিনারের আয়োজন করে।

উত্তরবঙ্গ জদুঘর ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। আরো বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাফর আলী, বিলুপ্ত বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাবেক সভাপতি মইনুল হক, সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা, উদ্দীপনের নির্বাহী পরিচালক বিদ্যুৎ কুমার বসু, অনুপম রায় প্রমুখ।

মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, দুটি দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের লাঞ্ছনা-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে একটি রক্তপাতহীন ভূখন্ড বিনিময় ও মানুষ বিনিময়ের ঘটনাটি বিরল হলেও, সেভাবে প্রচার করা হয়নি।

বিলুপ্ত বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাবেক সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা দাবি তোলেন, ১ আগস্ট তারিখকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ছিটমহল মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হোক।

পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ছিটমহলের মানুষের ভিতরের যে কথা তা ডকুমেন্টশন করা দরকার। কারণ এই মানুষগুলো সারাজীবন থাকবেন না।  র‍্যাডক্লিফ দেশ ভাগ করে একটি টিউমার রেখে গেছেন। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের পর আপনারা টিউমারটি অপারেশন করতে পেরেছেন। এই টিউমারের ব্যাথা ৬৮ বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আপনারা ভোগ করে গেছেন। এর প্রতিকার আপনারা করতে পারেন আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিচার চেয়ে। 

তিনি আরো বলেন, ভারত-বাংলাদেশ চুক্তির ফলে যে বিশাল অর্জন হয়েছে, তার জন্য বিভিন্ন মহলের কাজ করা দরকার। এটি শেখ হাসিনা সরকারের বিশাল সাফল্য অথচ তিনি আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত হননি। এটি নিয়েও কাজ করা দরকার।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সচিব ড. মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, ছিটমহলগুলোর জন্য বাংলাদেশ সরকার অনেক কিছু করছে। তাদের জন্য আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেই কাজগুলো সকলে মিলে করা দরকার।

সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, আগে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ জ্বলছে, আলপথ এখন রাজপথ হয়েছে। আজকের ছিটমহল এবং ৮ বছর আগের ছিটমহলের মধ্যে বিশাল পার্থক্য হয়েছে। এক সময় স্বাধীনতা বিরোধীরা গোলামী চুক্তি বলেছিল। অথচ এই চুক্তি ৫১ হাজার মানুষকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিয়েছে। শোকাবহ আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিটমহলবাসীদের জীবনে আলোকবর্তিকা নিয়ে এসেছেন।

তিনি আরো বলেন, নোবেলদাতাদের চোখে ছানি না থাকলে ছিটমহলের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কারণে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি শান্তিতে নোবেল পেতেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,  আগামী বছর থেকে এই ঐতিহাসিক দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হবে বলে আমি কথা দিচ্ছি। এছাড়াও তিনি বলেন, জনসংখ্যা বিষয়ে যে সকল বিরোধ রয়েছে সেটি মিটিয়ে ফেলা হবে।

২০১৫ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ ও ভারতের ১৬২টি ছিটমহল দুই দিনের মধ্যে বিনিময় হয়। এতে ৫১ হাজার ছিটমহলবাসী বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভ করেন। দীর্ঘদিন ধরে অমানবিক জীবনযাপনকারী ছিটবাসীর উন্নয়নের পথ সুগম হয়। আর কয়েক বছরে বাংলাদেশী ছিটমহলগুলোয় অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটে। সভায় বক্তারা ছিটমহল বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা স্বীকার করে ছিটমহলের ইতিহাস সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

আই. কে. জে/ 

শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদি ছিটমহল বিনিময়

খবরটি শেয়ার করুন