ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনের মুক্তি দেওয়া হলে নিজেদের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরও ছেড়ে দেবে হামাস।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী এই গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষ নেতা খালেদ মেশাল।
খালেদ মেশাল বলেন, ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে অনেক ফিলিস্তিনি বছরের পর বছর ধরে বন্দি রয়েছেন। আমরা তাদের মুক্তি চাই। যদি ইসরায়েলের সরকার কারবন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করে, তাহলে আমরাও (হামাসের হাতে জিম্মি) সবাইকে ছেড়ে দেবো।
প্রায় দুই বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর ভোররাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে হামাস এবং সূর্যের আলো ফোটার আগেই ইসরায়েলের দক্ষিণাংশের সীমান্ত বেড়া বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ওই ভূখণ্ডে প্রবেশ করে শত শত সশস্ত্র হামাস যোদ্ধা।
প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে হামলার শুরুর দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা কাটিয়ে পূর্ণ শক্তিতে যুদ্ধের ময়দানে নামে ইসরায়েল এবং প্রথম দিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
হামাসের হামলায় প্রথম দিনই ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন কয়েক শ’ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
এছাড়া এই দিন ইসরায়েল থেকে দেড় শতাধিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের বন্দি করে নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এই বন্দিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে—তা এখনও অস্পষ্ট, তবে মঙ্গলবারের (১৭ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে খালেদ মেশার ইঙ্গিত দিয়েছেন— তাদেরকে যতদূর সম্ভব নিরাপদে রাখা হয়েছে।
সোমবার একটি ভিডিওবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছে হামাসের সামরিক উইং আল কাসেম ব্রিগেড। সেই বার্তায় হামাসের হাতে জিম্মি মিয়া শ্চিম নামের ২১ বছর বয়সী এক তরুণীকে বলতে শোনা গেছে, তারা (হামাস) আমার যত্ন নিচ্ছে, আমার চিকিৎসা করাচ্ছে, ওষুধপত্রও দিচ্ছে। এখানে সবকিছু ঠিক আছে।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু আমি বাড়ি ফিরে যেতে চাই। আমার পরিবারের সঙ্গে, মা-বাবার সঙ্গে এবং ভাই-বোনদের কাছে যেতে চাই। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের মুক্ত করুন।
আরো পড়ুন: আমাদের লড়াই হামাসের সঙ্গে, ফিলিস্তিনের সঙ্গে নয়: নেতানিয়াহু
একই দিন পৃথক এক ভিডিওবার্তায় আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা বলেছেন, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিলেই আমরা সব ইসরায়েলিকে ছেড়ে দেবো। আর যেসব বিদেশি নাগরিক আমাদের হাতে বন্দি রয়েছেন— তারা আমাদের অতিথি। পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে হামাসের অপর জেষ্ঠ্য নেতা মুসা আবু মারজুক সোমবার এক বার্তায় বলেন, যতক্ষণ ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিমান অভিযান পরিচালনা করছে, ততক্ষণ বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তাজনিত কারণেই তাদের মুক্ত করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
সূত্র : রয়টার্স
এসকে/