সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকাবাসীর ‘পকেট কাটছে’ হাঁড়িভাঙা আম

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০১ অপরাহ্ন, ২৩শে জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পরিবহন ও প্যাকেজিং খাতে বাড়তি ব্যয়ের কারণে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার মানুষকে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের জন্য প্রতি কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। মৌসুমের আগেই বাগান মালিকদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে পুরো বাগান কিনে নেয়ায় ঠকছেন আরেক প্রান্তের উৎপাদকরাও।

প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণখাতে বিনিয়োগ করা গেলে এক হাঁড়িভাঙা আমই পুরো অঞ্চলের অর্থনীতি বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 পরিবহন ও প্যাকেজিং খাতে প্রতিকেজি হাঁড়িভাঙা আমের দাম ৩৫ টাকা বেড়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ফলে ২০-২৫ টাকার আম ৫৫-৬০ টাকা কেজি দামে কিনতে হচ্ছে সেখানকার মানুষকে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে গুনতে হচ্ছে আরও ৫-১০ টাকা বেশি। এ আমের অতুলনীয় স্বাদের মাশুল হিসেবে ক্রেতাদের কাছ থেকে একদিকে বেশি দাম আদায় করছেন মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। 

অন্যদিকে মৌসুমের আগেই পুরো বাগান নামমাত্র দামে তাদের কাছে বিক্রি করে ঠকছেন বাগান মালিকরা।

বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সব আম শেষ হবার পর বাজারে আসে হাঁড়িভাঙা আম। পরবর্তী এক মাস একক রাজত্ব করে, ব্যবসায়ীরা তুলে নেন মোটা অঙ্কের লাভ। কিন্তু গরমের কারণে এবার বেশ কিছুটা আগেভাগে এ আম বাজারে আসায় অন্যান্য জাতের আমের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: আম উৎপাদনে বাংলাদেশ সপ্তম, প্রথম কে? 

 অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্যাকেজিং ও পরিবহন ব্যবস্থা সুলভ ও সহজ করা গেলে কৃষক-ক্রেতা উভয়পক্ষই লাভবান হতো। অনলাইন মাধ্যমে এ আম বিপণন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হলেও সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

 হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও আধুনিক বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে অনন্য স্বাদের এ আম পুরো এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে দিতে পারে বলে মনে করেন সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রবিউল হাসান। 

 সারা দেশের আম ব্যবসায়ী ও বড় বড় সুপারশপগুলোর সঙ্গে হাঁড়িভাঙা আমের ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে বিপণন অধিদফতর। আম পরিবহনের ক্ষেত্রেও তাদের হিমায়িত যানবাহন সহায়তা দেয়ার কথাও জানান তিনি।

 কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, হাঁড়িভাঙা আম এরই মধ্যে রংপুরকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। 

 এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে এরইমধ্যে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাঁড়িভাঙা আমসহ আমের নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

 সরকারের পক্ষ থেকে রেল, বিআরটিসি ও ডাকবিভাগ হাঁড়িভাঙা আম পরিবহনে সহায়তা দিচ্ছে। হাট ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তাসহ নানা সহায়তার কথা জানালেন জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন। 

 তিনি জানান, শতরঞ্জির পাশাপাশি হাঁড়িভাঙা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জোর প্রচেষ্টা চলছে। এটি সম্ভব হলে আরও বেশকিছু সুবিধা পাবে এ পণ্যটি। তখন বিদেশে রফতানির উদ্যোগ গ্রহণ সহজতর হবে।

 গত বছরের তুলনায় ৪০ হেক্টর বেশি অর্থাৎ ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে এবার রয়েছে হাঁড়িভাঙা আম। ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর মোট ৩৫ হাজার মেট্রিকটন হাঁড়িভাঙা উৎপাদনের আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের। আর আড়াইশ’ কোটি টাকার হাঁড়িভাঙা আম বিক্রির আশা কৃষি বিপণন অধিদফতরের।

এসি/ আইকেজে 




ঢাকাবাসী হাঁড়িভাঙা আম

খবরটি শেয়ার করুন