সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, তালাকের হার হয়েছে দ্বিগুন

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:৩২ অপরাহ্ন, ১৪ই জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

২০২২ সালে দেশে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু (অর্থাৎ আজ যে শিশুটি জন্ম নিয়েছে তার গড় আয়ু হবে) ৭২ দশমিক ৪ বছর বা ৭২ বছর ৪ মাস ২৪ দিন। এর মধ্যে পুরুষের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৮ বছর বা ৭০ বছর ৯ মাস ১৮ দিন। দেশে সামগ্রিকভাবে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। তালাকের হারও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানীর পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। 


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরের ব্যবধানে তালাকের হার দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২১ সালে জাতীয়ভাবে তালাকের হার ছিলো প্রতি হাজারে শূন্য দশমিক সাতজন। যেটি ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক দশমিক চারজন। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে শূন্য দশমিক সাতজন তালাকের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে গ্রামে তালাকের হার ছিল শূন্য দশমিক আটজন। ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক দশমিক চারজন। এ সময়ে শহরে তালাকের হার দাঁড়িয়েছে এক দশমিক একজন। যা ২০২১ সালে ছিল শূন্য পাঁচজন।


এ ছাড়া নারীর ৭৪ দশমিক ২ বছর বা ৭৪ বছর ২ মাস ১২ দিন। এ ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের গড় আয়ু বেড়েছে। ২০২১ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিলো ৭২ দশমিক ৩ বছর বা ৭২ বছর ৩ মাস ১৮ দিন। এদিকে উলটো চিত্র দেখা গেছে শিশুদের তথ্যে। 


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে দেশে এক বছরের কম বয়সি শিশুর মৃত্যুহার ছিলো হাজারে ২২ জন, ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৫ জন। সেই সঙ্গে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর মৃত্যুহারও বেড়েছে। ২০২১ সালে যা ছিল প্রতি হাজারে ২৮ জন, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। এ ছাড়া গড় আয়ুর তথ্যে দেখা গেছে, ২০২০ সালে যা ছিল ৭২ দশমিক ৮ বছর। ২০১৯ সালে গড় ছিল ৭২ দশমিক ৬ বছর। 


আরো পড়ুন: মাদকাসক্তি ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত


প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। 


বিবিএস’র মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) পরিমল চন্দ্র বসুর সভাপতিত্বে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম (এসভিআরএস) প্রকল্পের পরিচালক আলমগীর হোসেন। 


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বিয়ের হার বেড়েছে। ২০২১ সালে বিয়ের হার ছিল ১৩ দশমিক ৫ জন, যা বেড়ে ২০২২ সালে হয়েছে ১৮ দশমিক একজন। ২০২১ সালে গ্রামে বিয়ের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ জন, যা ২০২২ সালে হয়েছে ১৯ দশমিক ৫ জন। শহরে ২০২২ সালে বিয়ের হার ১৩ দশমিক ৮ জন, যা ২০২১ সালে ছিল ৯ দশমিক ৬ জন। তবে কমেছে মাতৃমৃত্যুর হার। ২০২১ সালে প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মারা যেত ১৬৮ জন মা।


২০২২ সালে সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১৫৬ জনে। এছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার কমেছে। ২০২১ সালে ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করত। সেটি ২০২২ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশে। এদিকে বেড়েছে স্থূল প্রতিবন্ধিতার হার। ২০২২ সালের হিসাবে প্রতি এক হাজার জনসংখ্যার মধ্যে ২৫ দশমিক ৫ জন প্রতিবন্ধী পাওয়া গেছে। যেটি তার আগের বছরে ছিল ২৪ দশমিক ১ জন। 


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৫। এটি ২০২১ সালের তুলনায় একটু বেড়েছে। এদিকে ধর্মের ক্ষেত্রে ২০২১ ও ২২ সালে মুসলিম এবং হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের লোকসংখ্যা একই রয়েছে। দেশে বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে ১৫ বছরের বেশি বয়সের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ, এটি ২০২১ সালে ছিল ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ।


ইন্টারনেট ব্যবহার করে পাঁচ বছর বয়সের বেশি মানুষের মধ্যে ৪১ শতাংশ, যেটি ২০২১ সালে ছিল ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ। দেশে বিদ্যুতের (গ্রিড ও সৌর) আওতায় এসেছে ৯৯ দশমিক ১৬ শতাংশ পরিবার। সাত বছর ও তার বেশি জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া ১৫ বছর ও তার বেশি জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ। 


প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আমরা অর্থনৈতিক সংকটে নেই, তবে চাপে আছি। সংকট হলে বৈশাখী ভাতা ও ঈদ বোনাস দেওয়া যেত না।


এসি/



আয়ু তালাক বিয়ে

খবরটি শেয়ার করুন