প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। - ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ইস্যুতে মার্কিন ছয় কংগ্রেসম্যানের আলাদা দুটি চিঠির বিষয়ে কিছুই জানে না যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। কংগ্রেসম্যানরা যা জানান, তা গোপন রাখা হয় বলেও দাবি করন দফতরের মুখপাত্র। কিন্তু প্রশ্ন ওঠেছে, গোপনীয় চিঠি প্রকাশ্যে এলো কীভাবে?
স্থানীয় সময় বুধবার (১৪ জুন) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ব্রিফিংয়ের আগমুহূর্তে বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের আরেকটি চিঠি ছড়িয়ে পড়ে বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন পেজে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কথিত ওই চিঠি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
এর আগে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে ছয় কংগ্রেসম্যান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একটি চিঠি দেন। তাতেও সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ তোলা হয়।
তবে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা যে চিঠি দিয়েছেন, সে সবের তথ্য মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন দেশের হিন্দু ও খ্রিষ্টানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সর্বশেষ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্যের সত্যতা বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, কংগ্রেসম্যানদের চিঠির বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।
মিলার বলেন, ‘আমি চিঠির বিষয়ে কিছুই জানি না। কংগ্রেসম্যানদের কাছ থেকে যে সব চিঠি পাওয়া যায়, গোপনেই সেগুলোর প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়। এ বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে গোপনীয়ভাবে তার সমাধান করা হবে।
এ সময় বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র।
এদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ইস্যুতে মার্কিন ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠি প্রত্যাখ্যান করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৯২ মার্কিন নাগরিক। তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে এ নিয়ে একটি পাল্টা আবেদনও পাঠিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বরাবর লেখা আবেদনে বলা হয়, ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে প্রকৃতপক্ষে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারী বিএনপি-জামাতকে আড়াল করা হয়েছে। যার তথ্য-প্রমাণ বাংলাদেশি মার্কিন নাগরিকদের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, তারা বলেছেন, বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে অর্থের বিনিময়ে এ চিঠি দেয়া হয়েছে।
জো বাইডেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বাংলাদেশের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের তালিকা তুলে ধরেন। সে অনুযায়ী, ২০২১-২২ জনশুমারি অনুযায়ী হিন্দু জনগোষ্ঠী ৬.৭ শতাংশ বেড়েছে, যা ১৯৯১ সালের পর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশ নিয়ে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি প্রত্যাহারের দাবি ১৯২ মার্কিন বাংলাদেশির
চিঠি দেয়া ছয় কংগ্রেসম্যান হলেন: স্কট পেরি, ব্যারি মুর, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, টিম বার্চেট, ও কিথ সেলফ। তারা সবাই বিরোধীদল রিপাবলিকান পার্টির সদস্য। এদের মধ্যে চারজন আগামী নির্বাচনে বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনসের সঙ্গে ২০২১ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে ‘কোভিডের কারণে ভোটাররা যথাযথভাবে অংশ নিতে পারেনি’ - এ অজুহাতে ভোট বাতিল করে সে সময়ের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আরও এক মেয়াদে হোয়াইট হাউসে রাখার চেষ্টা চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
এম/