শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগে বরখাস্ত হলেন ভিকারুননিসার শাখাপ্রধান

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:২৩ অপরাহ্ন, ৫ই জানুয়ারী ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ফের ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে মো. শাহ আলম খান নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির মূল দিবা শাখার (বাংলা ভার্সন) প্রধান।

বৃহস্পতিবার (৪ঠা জানুয়ারি) ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধরীর সই করা চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

শাহ আলম খানকে দেওয়া সাময়িক বরখাস্তের চিঠিতে বলা হয়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অনুসরণ না করে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। এতে আপনার (শাহ আলম খান) সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

এতে আরও বলা হয়, একজন দায়িত্বশীল শাখাপ্রধান এবং সিনিয়র শিক্ষক হয়ে এমন গর্হিত কাজ করার কারণে বিভিন্ন মহলে ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। জনসম্মুখে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির মৌখিক নির্দেশক্রমে বিধি মোতাবেক মূল দিবা (বাংলা ভার্সনের) শাখাপ্রধান মো. শাহ আলম খানকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।

কেন তাকে চাকরি হতে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। এ বিষয়ে বলা হয়, ‘আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

ভিকারুননিসা স্কুলের মূল দিবা শাখা (বাংলা ভার্সন) থেকে শাহ আলম খানকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করার কথাও জানানো হয় চিঠিতে। একই সঙ্গে তাকে শাখাপ্রধানের দায়িত্বসহ প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম ও কমিটি থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য লটারি হলেও সেখানে বেশ কিছু বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে যেগুলো অনলাইনে সার্চ করে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। 

এর আগেও শাহ আলমের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি ছাড়া একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর ৩ সন্তানকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে আসন খালি না থাকায় দ্বিতীয় থেকে তদূর্ধ্ব শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করলেও অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি ও অন্যান্য শিক্ষকদের সহযোগিতায় বিভিন্ন শ্রেণিতে অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে তিন জন শিক্ষার্থী গত বছর ভর্তি করা হয়।

জানা যায়, ভর্তি ছাত্রীদের মধ্যে একজন বোনের কোটায় আবেদন করে নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ তার কোনো বোন ভিকারুননিসা স্কুলে পড়ে না। আরেকজনের জন্ম তারিখের গরমিল পাওয়া যায়। তালিকায় তার নামও মেলেনি। অন্য আরও দুজনের ক্ষেত্রেও ভর্তির যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি।

ফরম যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা দুজন শিক্ষক জানান, লটারিতে নির্বাচিত নয়, এমন শিক্ষার্থীদের নামও প্রথম নির্বাচিত তালিকায় ছিল। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করা শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি নেওয়া হয়। এ নিয়ে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রাথমিকভাবে সত্যতা মিলেছে। এজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ভর্তির যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করায় শাহ আলম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন। তদন্তের পর গভর্নিং বডি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

এসকে/ 

বরখাস্ত ভিকারুননিসা ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ

খবরটি শেয়ার করুন