শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূমধ্যসাগর থেকে ৩০ বাংলাদেশি উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, ৬ই নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূল থেকে এক অপ্রাপ্তবয়স্কসহ ৩০ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে ফরাসি দাতব্য সংস্থা এমএসএফ-এর উদ্ধারকারী জাহাজ জিও ব্যারেন্টস। 

গত শুক্রবার (নভেম্বর) অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডক্টর উইদাউট বর্ডারসের উদ্ধারকারী জাহাজের নাবিকেরা। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে অভিবাসনবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারের সংবাদ সংগ্রহে জাহাজটিতে আছেন ইনফোমাইগ্রেন্টস এর বিশেষ প্রতিনিধি মার্লেন পানারা।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে লিবিয়া উপকূলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় উদ্ধার অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। ওই সময় একটি মোটর চালিত নৌকায় ঝুঁকিতে থাকা ৩০ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে জিও ব্যারেন্টস জাহাজে তোলা হয়। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা নৌকাটি ছিল সাদা ফাইবারগ্লাসের তৈরি।

উদ্ধারের পর রুবেল গাজী বলেন, আমি এক মাস তিন দিন আগে বাংলাদেশ ছেড়ে আসি। বাংলাদেশ থেকে বিমানে বাহরাইন ও ইস্তাম্বুল হয়ে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছেছিলাম। একটি কোম্পানিতে কাজের ভিসায় লিবিয়ায় এসেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, সমুদ্র যাত্রার আগে দালালের গেইম ঘরে তিন থেকে চার দিন অনেক কষ্টে ছিলাম। খাবার, পানি ও গোসল নিয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছি। লিবিয়া উপকূল থেকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যাত্রার পর রাত ৯টার মধ্যে আমাদের এমএসএফ উদ্ধার করে। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন আমাদের ইতালির বারি শহরে উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই দালালেরা দ্রুত আমাদের নৌকায় তুলেছিল। যাত্রার আগে আমরা অপ্রস্তুত ছিলাম।

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সলিল সমাধি হিসেবে পরিচিত। এই ৩০ বাংলাদেশিকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় নেই কোনো সরকারি উদ্ধারকারী জাহাজ। বছরের পর বছর ধরে গুটি কয়েক বেসরকারি উদ্ধার জাহাজ এ রুটে সক্রিয় থাকলেও ইতালিসহ বিভিন্ন সরকারের নানা আইনি মারপ্যাঁচে বেগ পেতে হচ্ছে এনজিওগুলোকে।

নভেম্বরের শুরুতে ভূমধ্যসাগরে নৌকা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারের পর জার্মান উদ্ধারকারী জাহাজ সি-আই ফোরকে আবারও ইতালিতে আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। লিবিয়ার উপকূলরক্ষীদের নির্দেশনা অমান্য করার অভিযোগে জাহাজটিকে আটক করা হয়। নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পাশাপাশি জাহাজটিকে তিন হাজার ইউরো জরিমানা করেছে ইতালি।

লিবিয়া উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টারত অভিবাসীদের মধ্যে মিশর, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফ্রিকান দেশগুলোর নাগরিকেরা শীর্ষে আছে।

অনিয়মিত অভিবাসীদের সাগর পথে আসার সংখ্যা না কমলেও ইতালিতে দিন দিন কঠিন করা হচ্ছে আশ্রয় আইন। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন আশ্রয়প্রার্থীরা। ক্যাম্পে আবাসন সংকট, আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাখা, স্বাস্থ্য সুবিধাসহ রাজনৈতিক আশ্রয়ের নানা দিক কঠোর করে অভিবাসীদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে ইতালির কট্টর ডানপন্থি সরকার।

ইতালিতে অভিবাসী চাপ বেড়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে ফ্রান্স-ইতালি সীমান্তেও। অনিয়মিত অভিবাসীদের ঠেকাতে ইতালির সঙ্গে থাকা সীমান্তে ৫০০ জনেরও বেশি সীমান্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে ফরাসি সরকার।

এসকে/ 

লিবিয়া ভূমধ্যসাগর বাংলাদেশি উদ্ধার অভিবাসনপ্রত্যাশী

খবরটি শেয়ার করুন