শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** কলকাতায় পাঁচ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড *** নির্বাচনে সহায়তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্রিফ করল জাতিসংঘ *** কাফু–ক্যানিজিয়ার সঙ্গে ঢাকায় নৈশভোজের সুযোগ *** নতুন গণমাধ্যম নীতি নিয়ে আপত্তি, পেন্টাগনের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক টাইমসের মামলা *** প্রধান উপদেষ্টাকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর ফোন, বন্যায় সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা *** খালেদা জিয়াকে নিয়ে নির্মিত সরকারি ডকুমেন্টারি প্রকাশ *** একটি মানবশিশুকে যেভাবে পাহারা দিলো চারটি কুকুর *** অনিবার্য কারণ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনি মাঠে থাকবে: নজরুল ইসলাম খান *** নিবন্ধন পাচ্ছে ‘আমজনতার দল’, প্রতীকের বিষয়ে যা জানা গেল *** এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হতে পারে, জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন

মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে চায় চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এর প্রথম মিয়ানমার সফর ইঙ্গিত দেয় যে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে চায় চীন। মিয়ানমারে আসার পূর্বে, মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত নোলিন হেইজারের সাথে সাক্ষাৎ করেন কিন গ্যাং।

কিন বলেন, মিয়ানমার ইস্যু অত্যন্ত জটিল এবং এর কোন দ্রুত সমাধান নেই। মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে সাংবিধানিক ও আইনি কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, মতবিরোধ দূর করা এবং রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য বলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা (আসিয়ান) এর মধ্যস্থতাকে সম্মান প্রদর্শন করা এবং মিয়ানমারের বিষয়ে তার পাঁচ দফা ঐক্যমতের বাস্তবায়নকে উন্নীত করা বলে জানান তিনি। চীন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) বর্তমান রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিষদ (এসএসি) সহ অতীত ও বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে এমন অটলভাবে রক্ষা করেছে যেন মিয়ানমার তার একটি প্রদেশ।

মিয়ানমার আসার পূর্বে চীন-মিয়ানমার সীমান্তে সফরে যান তিনি। সীমান্ত পরিদর্শনের সময়, কিন স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টি, পুলিশ এবং সরকারী বিভাগকে সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে যোগদানের আহ্বান জানান।

সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত বাণিজ্য উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সমন্বয় করা প্রয়োজন, বলে জানান তিনি। তবে এটিও উপলব্ধি করা যাচ্ছে যে মিয়ানমারের জন্য চীনের নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে চীনের গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ বা জিএসআই কে স্বাগত জানায় মিয়ানমার।

গত ডিসেম্বরে, চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন মিয়ানমার সফর করেন এবং জান্তা নেতা সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং-এর সাথে দেখা করেন। দেং চীন সীমান্তে অবস্থিত উত্তর মিয়ানমারের জাতিগত সেনাবাহিনীর সাথেও বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন।

 উত্তর সীমান্তে দেং ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ), কচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এনডিএএ), শান স্টেট প্রগ্রেস পার্টি (এসএসপিপি), আরাকান আর্মি, তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স আর্মির প্রতিনিধিদের সাথে পৃথক বৈঠকে বসেন।

গত ডিসেম্বর থেকে, চীনের ইউনান প্রদেশের বেশ কয়েকজন চীনা কর্মকর্তা জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদর দফতর পরিদর্শন করেছেন এবং যুদ্ধবিরতি, মিয়ানমারের রাজনৈতিক দৃশ্যপট, সীমান্ত বাণিজ্য এবং তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন।

মিয়ানমারের পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। তবে বিশ্লেষকদের মতামত হলো, মার্কিন কংগ্রেসের বার্মা আইন পাশের ফলেই চীন এমন পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করেছে। এ আইন মিয়ানমারে জান্তা বিরোধী শক্তির জন্য তহবিল এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা অনুমোদন করে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের ভেতরে ও বাইরে বিরোধী শক্তির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে চীন উত্তরাঞ্চলে, বিশেষ করে শান ও কচিন রাজ্যে তার প্রভাব সুসংহত করেছে।

এপ্রিলের মাঝামাঝি, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক লিয়াজোন বিভাগের পরিচালক পেং জিউবিন মিয়ানমার সফরে যান। সেখানে তিনি সাবেক জান্তা নেতা থান শোয়ে এবং থেইন সেইনের সাথে বৈঠকে বসেন। থেইন সেইনের রাজনৈতিক সংস্কার দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছিল।

২০০৮ সালের সামরিক খসড়া সংবিধানের অন্যতম স্থপতি থান শোয়ে। অন্যদিকে ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন থেইন সেইন। অর্থাৎ চীন মিয়ানমারের অতীত এবং বর্তমান উভয় সরকারের সাথেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে।

আরো পড়ুন: পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি ইউক্রেনের, রুশ বাহিনীর মাঝে বিশৃঙ্খলা

এপ্রিলের শুরুতে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সিপিসি ইউনান প্রাদেশিক কমিটির সেক্রেটারি ওয়াং নিং মিয়ানমার সফর করেন। চীনা কর্মকর্তারা জানান যে তারা ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভেঙে দেওয়ায় খুশি নন।

এ সফরের সময়, চীন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, চাল, কৃষি পণ্য এবং সার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। একইসাথে জান্তামন্ত্রীদের সাথে বিদ্যুৎ, কৃষি, পশুসম্পদ, সেচ, জ্বালানি ও বাণিজ্যের চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেন। সেইসাথে অবকাঠামোগত চুক্তি তো রয়েছেই।

মিয়ানমারের সাহায্য করার পেছনে চীনের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। চীন-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর (সিএমইসি) সহ বেশ কয়েকটি বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কেন্দ্রে থাকা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের (বিআরআই) মূল অংশ মিয়ানমার।

চীনা সরকারী কর্মকর্তা এবং মিয়ানমারের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় আন্তঃসীমান্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে, বড় অবকাঠামো এবং সংযোগ প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করতে এবং মিয়ানমারে বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে চায়।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পরপরই, মিয়ানমারে চীন বিরোধী মনোভাব বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ব্যাপক চীন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। চীনা পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়  এবং ইয়াঙ্গুনে চীনা কারখানায় হামলা করা হয়। দেশজুড়ে যুবকেরা চীনা পণ্য বয়কট করার জন্য প্রচারণাও শুরু করে।

এমএইচডি/ আইকেজে 

চীন মিয়ানমার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তর্জাতিক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250