ছবি-সংগৃহীত
শিক্ষক সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে দেশের মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা। দেশে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের অধীনে থাকা সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক ও শিক্ষক নেই।
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় এমবিবিএস (ব্যাচেলর অব মেডিসিন অ্যান্ড ব্যাচেলর অব সার্জারি) কোর্সে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বহুল আলচিত। এর ফলে শিক্ষার্থীরা হাতেকলমে শিক্ষা অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ অবস্থায় শিক্ষার গুণগত মান রক্ষা করা কতটা কঠিন হয়ে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। চিকিৎসক তৈরির নামে জোড়াতালির পাঠদান কোনোভাবেই কাম্য নয়।
জানা যায়, কলেজগুলোয় মৌলিক বিষয়ে চাহিদার প্রায় অর্ধেক পদই বর্তমানে খালি। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় প্রায় ৪৯ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৩টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি। এগুলোয় বিভিন্ন পদমর্যাদার শিক্ষকের পদ রয়েছে ৪ হাজার ৭৮৮টি। এর বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ২ হাজার ৮৫৯ জন।
শূন্যপদ রয়েছে ২ হাজার ১২২টি। কলেজগুলোয় অধ্যাপকের পদ রয়েছে ৭০৯টি। এর মধ্যে ৪৭০টি খালি। এছাড়া দেশে সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পদ খালি রয়েছে।
সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় এমবিবিএস কোর্সে প্রতিবছর ৪ হাজার ৩৫০ শিক্ষার্থী ভর্তি হন; আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আরও ১ হাজার ৩০ জন বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় শিক্ষার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে জনবল সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব বিষয়কে চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাণ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়, সেসব বিষয়েও শিক্ষক সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তা না হলে মেডিকেল কলেজগুলোয় পাঠদান কার্যক্রমে বিপর্যয় নেমে আসবে এবং ভবিষ্যতে দক্ষ মেডিকেল শিক্ষক বা চিকিৎসক খুঁজে পাওয়াই কঠিন হতে পারে।
আরো পড়ুন: কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বে প্রথম স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ
জানা যায়, কাঙ্ক্ষিত সময়ে পদোন্নতি না হওয়া এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ কম থাকায় অধিকাংশ চিকিৎসকের মেডিকেল কলেজের মৌলিক বিষয়গুলোর শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ কম।
অন্যদিকে বেসরকারি বহু মেডিকেল কলেজে পরিচালনা ব্যয় কমাতে কম জনবল দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ খাতে বিদ্যমান সংকটগুলো দূর করতে হলে নতুন জনবল নিয়োগ দিতে হবে এবং তাদের পদোন্নতি নিয়ে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে সেসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের মেডিকেল কলেজগুলোয় জরুরি ভিত্তিতে অবকাঠামো সংকট দূর করতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের সমাধানে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা যেতে পারে। এসব ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ঘাটতি নিয়েই শিক্ষার্থীদের এমবিবিএস কোর্স শেষ করতে হবে।
এসি/ আই.কে.জে