শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে এলাকায় মশা বেশি সে এলাকায় ডেঙ্গু রোগী নেই!

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:২২ পূর্বাহ্ন, ৬ই অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্ষা মৌসুমের জরিপে ঢাকা নগরে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে মশার ঘনত্ব ব্রুটো ইনডেক্সে ৭৩ শতাংশ। কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ওই এলাকায় গত ৩৮ দিনেও কোনো ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পায়নি। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন,  এই জরিপটি দেড় মাস আগের করা। ৩ সেপ্টেম্বর জরিপ শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদের এ বিষয়ক প্রতিবেদন দিয়েছে। এটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোতে ব্যবস্থা নিয়েছি। জরিপে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে (কাকরাইল-সিদ্ধেশ্বরী-পশ্চিম মালিবাগ) এডিস মশার ঘনত্ব ঢাকার মধ্যে সর্বোচ্চ দেখানো হয়েছে। ব্রুটো ইনডেক্সে তা ৭৩ শতাংশ।

কিন্তু সেখানে গত ৩৮ দিনে একজন ডেঙ্গু রোগীও পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে আমাদের প্রশ্ন জেগেছে।

গত ২৫ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটিতে বর্ষা মৌসুমে জরিপ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ব্রুটো ইনডেক্স-বিআই।

এই মানদণ্ডে লার্ভা ২০ শতাংশের বেশি হলে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব নিশ্চিতভাবে বাড়বে।

উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটির ২০.৮৬ শতাংশ বাড়িতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। উত্তর সিটির ২৩ শতাংশ এবং দক্ষিণ সিটির ১৯ শতাংশ। গড় ব্রুটো ইনডেক্স ২৬.৮৩ শতাংশ। কনটেইনার ইনডেক্স ২৪.৮৮ শতাংশ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৯ শতাংশ এলাকায় বিআইয়ের পরিমাণ ২০-এর বেশি। সর্বোচ্চ বিআই ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৭৩ শতাংশ। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে (সেগুনবাগিচা-গুলিস্তান-প্রেস ক্লাব-ঢাকা মেডিক্যাল এলাকা) ৭০ শতাংশ।

ঢাকা উত্তরে সবচেয়ে বেশি ৬০ শতাংশ ঘনত্ব পাওয়া গেছে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে (তেজগাঁও শিল্প এলাকা-বেগুনবাড়ী-কুনিপাড়া)। ৪৯ শতাংশ ঘনত্ব পাওয়া গেছে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে (পল্লবী ও মিরপুরের কিছু অংশ)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, ‘কমিউনিটিকে যুক্ত করে এসব মশা যদি নিধন করা না যায়, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ খুব কঠিন হবে। এখনো কমার লক্ষণ দেখছি না।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, যখন ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি হয়, তখন ধরে নেওয়া হয় এখানে এডিস মশাবাহিত রোগ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। জরিপ অনুযায়ী বলা যায়, ঢাকার দুই সিটির মানুষই ঝুঁকিতে।

তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে, সেভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে না। রোগীর ঠিকানা ধরে বাড়ি গিয়ে মশা মারতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতিতে আরো বেশি দেরি হবে।

আরো পড়ুন: ডেঙ্গুর টিকার ট্রায়ালে সহযোগিতা করবে সরকার

মশা নিধন না হলে সংকট কাটবে না

এডিস মশা নিধনে স্থায়ী কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সংকট কাটবে না বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির জানান। তিনি বলেন, বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা না কমলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমবে না।

দেশে ডেঙ্গুর টিকার প্রয়োগ নিয়ে জাতীয় টিকাসংক্রান্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির (নাইট্যাগ) পরামর্শ জানতে চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কমিটির সুপারিশ পেলে ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এনএসওয়ান টেস্ট কেন নেগেটিভ হচ্ছে

আইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, তিন দিনের জ্বর পর্যন্ত এনএসওয়ান পজিটিভ থাকে। এরপর সেটি আর পজিটিভ পাওয়া যায় না। কিন্তু পিসিআর টেস্ট করলে সেটি কিন্তু আবার পজিটিভ আসে। কারণ, পিসিআর হলো অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য সেনসেটিভ। 

এসি/ আই.কে.জে


ডেঙ্গু মশা

খবরটি শেয়ার করুন