সোমবার, ৬ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বিএনপির সরকার ভারতের সঙ্গে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবে *** বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নোয়াখালীকে বিভাগ করা হবে: বরকতউল্লা *** অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুলের মৃত্যুর ১২ দিন পর সন্তান জন্ম দিলেন স্ত্রী *** সৌদি আরবে বাংলাদেশি সাধারণ শ্রমিক নিয়োগে ‘মাইলফলক’ চুক্তি *** নিজেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মনে করেন না তারেক রহমান *** রেগুলেটরি টি সেল আবিষ্কারে চিকিৎসায় নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী *** আমাদের কী মরে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা অসুস্থ: আদালতে দীপু মনি *** সেনাপ্রধানের বক্তব্য বিকৃত করে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চলছে: আইএসপিআর *** শেখ হাসিনার বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত নয়াদিল্লি: ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব *** বিশ্বজুড়ে শাসকগোষ্ঠীর প্রতি জেন-জিদের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে

যেখানে মাটি খুঁড়লেই মেলে কোটি টাকা মূল্যের হীরা!

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:১৬ অপরাহ্ন, ২১শে জুলাই ২০২৩

#

অন্ধ্রপ্রদেশে গ্রীষ্মের রুক্ষ জমিতে অঝোরে বৃষ্টি নামলেই নরম মাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে যায় হীরা-সহ নানান দামি রত্ন

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য এমন এক অঞ্চল যেখানে প্রায়ই মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় কোটি টাকার হীরা। সেখানে খরিফ মওসুম শুরুর আগে চাষের জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক লহমায় ভাগ্য বদলে গিয়েছিল এক দিনমজুরের। জমিতে কোদাল চালাতেই হাতে উঠে এসেছিলে একটি হীরা। সেটি দু’কোটি রুপিতে বিক্রি করেছিলেন তিনি।

অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলার ওই অখ্যাত দিনমজুরের আগে এভাবেই ভাগ্য ফিরেছে বহুজনের। গ্রীষ্মের রুক্ষ জমিতে অঝোরে বৃষ্টি নামলেই নরম মাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে যায় হীরা-সহ নানান দামি রত্ন। মূলত অন্ধ্রের অনন্তপুর ও কুর্নুল জেলার মধ্যেকার এলাকায় হিরার খোঁজ মেলে।

বর্ষা এলেই রায়লসীমা-সহ অন্ধ্রের নানা এলাকায় হীরা খোঁজার ‘মওসুম’ শুরু হয়ে যায়। গণমাধ্যমের দাবি, ২০২১ সালে জন্নাগিরি গ্রামে দুই কোটি চার লাখ রুপির হীরা খুঁজে পেয়েছিলেন তিনজন।

গত বছর একটি হীরা খুঁজে পাওয়ায় অন্ধ্রের এক কৃষকের ঘরে ঢুকেছিল ৪০ লাখ রুপি। আবার ৩০ ক্যারাটের হীরা মেলায় অন্য এক কৃষক ১ কোটি চার লাখ রুপি পেয়েছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে একটি হীরার জন্য ৬০ লাখ টাকা পান এক কৃষক। পরের বছর অন্ধ্রের দুই বাসিন্দার ভাগ্যবদল হয়েছিল। দু’টি দামি রত্ন খুঁজে পেয়েছিলেন তারা। তবে সে দু’টি যথাক্রমে পাঁচ এবং ছয় লাখ অর্থমূল্যের হলেও নাকি মোটে দেড় লাখ ও ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন তারা।

রায়লসীমা এলাকায় দামি রত্নের খোঁজ পাওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করেন অনেকে। মধ্যযুগে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রমরমার সময় হীরা-জহরতের জন্য খ্যাতি ছিল রায়লসীমা অঞ্চলের। কথিত আছে, ওই সময় শাক-সব্জি বিক্রির মতো হীরা-সহ নানান দামি রত্নের বিক্রিবাট্টা চলত।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দামি রত্নের কেনা-বেচার ধরনে বদল এসেছে। তবে দশকের পর দশক ধরে কুর্নুল জেলার তুগ্গলি, জন্নাগিরি, মদ্দিকেরা ও অনন্তপুরের বজ্রকরুর এলাকায় বর্ষাকালে ‘হীরার ফসল’ তোলেন বহুজন।


অন্ধ্রের নানান প্রান্ত থেকে বর্ষায় এই এলাকাগুলোতে জড়ো হন হীরা শিকারিরা। স্থানীয়রা ছাড়া পাশের রাজ্য কর্নাটক, তেলঙ্গানা থেকেও রায়লসীমায় ভিড় করেন অনেকে।

এই ভিড়ের মধ্যে হীরা ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। হীরা শিকারিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের রফা করানোর জন্য হাজির হয়ে যান মধ্যস্থতাকারীরাও।

হীরা খোঁজার মওসুমে ফায়দা তোলেন অন্ধ্রের পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। কারণ, হীরার টানে বর্ষায় রায়লসীমায় ঘাঁটি গড়েন অনেকেই।

তাদের কেউ এলাকায় তাঁবু খাঁটিয়ে রাত কাটান। অনেকে আবার আশপাশের হোটেল, লজ, অতিথিশালায় গিয়ে ওঠেন। ফলে হোটেল বা লজমালিকদের এই মওসুমে রমরমা ব্যবসা হয়।

মূলত, জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হীরার খোঁজে ভিড় করেন হাজার হাজার স্থানীয় এবং অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দারা।

হীরা খোঁজার মওসুমে প্রশাসনের কড়াকড়ি বিশেষ দেখা যায় না। দামি রত্ন হাতে এলেই ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রির করানোর চেষ্টা শুরু করেন মধ্যস্থতাকারীরা। ফলে তাদের পাল্লায় পড়ে অনেক সময় বহুমূল্য রত্নও বেশ কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন হীরার খোঁজে আসা মানুষজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জন্নাগিরি গ্রামের এক বাসিন্দার দাবি, চাষের জমিতে একটি হীরা খুঁজে পেয়েছিলেন। তবে পুলিশ-প্রশাসনের থেকে হেনস্থার ভয়ে এবং নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে সেটা দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করেন। তার সন্দেহ, ওই হীরার দাম আরও বেশি।

আরো পড়ুন: তাজমহলের দেয়ালে বন্যার পানি

ওই বাসিন্দার আরও দাবি, হীরা বিক্রির পর পুলিশকে ছয় লাখ এবং রাজস্ব দফতরকে চার লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। বাকি টাকায় তার যাবতীয় ঋণ শোধ করেছেন।

বর্ষার মওসুমেই অন্ধ্রের জমিতে হীরা ‘ফলে’ কেন? তার কারণ খুঁজতে অন্ধ্রের মাটিতে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে একমাত্র বৃষ্টির মওসুমেই জমির ওপরে উঠে আসে দামি পাথরগুলো। খনি বিশেষজ্ঞ এবং ভূতত্ত্ববিদদের মতে, এই এলাকাগুলোতে সরকারি উদ্যোগে গবেষণা চালানো উচিত।

সূত্র : এবিপি

এম এইচ ডি/ আই. কে. জে/

ভারত হীরা রত্ন পাথর ভূতত্ত্ববিদ টাকা রুপি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250