বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোগ-বালাই কমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের তাগিদ

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:০০ অপরাহ্ন, ১৯শে ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

তামাকসহ অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও নেশাদ্রব্য গ্রহণের ফলে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতে অধিকসংখ্যক মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক পরিবার দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো।

রোববার (১৭ই ডিসেম্বর) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ‘সিগারেট কোম্পানির নতুন মিথ্যাচার: টার্গেট তরুণ প্রজন্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা)।

আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশে তামাক ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দূর্বল করে দিচ্ছে। এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। এরই মাঝে সিগারেট কোম্পানিগুলো নানা মিথ্যাচারের মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য বাজারজাত করছে। কোম্পানিগুলোর মূল উদ্দেশ্য তরুণ সমাজকে নেশায় আসক্ত করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া। তাই রোগ কমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি হয়ে পড়েছে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সকল সংগঠনকে সাথে নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে জোরালো দাবি জানানো প্রয়োজন। এছাড়া প্রমাণ সহকারে ই-সিগারেট ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রচার বাড়ানোর পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণকে এর সাথে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে হবে।

মাদক নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়গুলোকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। এই কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে চিকিৎসকদের যুক্ত করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার প্রচারণা বাড়াতে হবে।

আরো পড়ুন : খেজুরের রস পানে বিরত থাকার আহ্বান

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নওজিয়া ইয়াসমিন বলেন, সকল স্তরের মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছানোর আগেই ই-সিগারেট বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা প্রয়োজন।

অ্যাকটিভ বিডি ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. অনুপম হোসেন বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত নাটক সিনেমায় জনপ্রিয় অভিনেতাদের মাধ্যমে বিনা প্রয়োজনে ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ই-সিগারেট ব্যবহারের দৃশ্যই প্রচার করা হচ্ছে বেশি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, ই-সিগারেট অন্যান্য প্রচলিত তামাকজাত দ্রব্যের মতই ক্ষতিকর। সুতরাং, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ নয় বরং সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ও প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেলের প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান।

এছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম আহমেদ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস (বাংলাদেশ) সিনিয়র কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত কুমার সিনহা, স্টপ বাংলাদেশের ফোকাল পয়েন্ট ফাহমিদা ইসলাম প্রমুখ।

এস/এসকে

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন রোগ-বালাই

খবরটি শেয়ার করুন