ছবি: সংগৃহীত
মা দুর্গা ফিরে গিয়েছেন মহাদেবের কাছে, সুদূর কৈলাসে। কিন্তু মর্ত্যে রেখে গিয়েছেন তাঁর এক মেয়েকে। মা লক্ষ্মী ধন, সম্পত্তি, সমৃদ্ধির দেবতা।
তাঁর আরাধনায় সংসার ভরে ওঠে প্রাচুর্যে। তাই ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষীর আরাধনায় ব্রতী হন ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা। জগৎকে আলোকিত করে রাখেন দেবী। দেবীর বাহন হল পেঁচা। এখন স্বাভাবিক কারণেই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, মা লক্ষ্মীর বাহন কেন পেঁচা? আসুন জেনে নেওয়া যাক, কী বলা রয়েছে ধর্মে।
ঋকবেদে বলা হয়েছে, পেঁচা হলেন যমের দূত। যম অর্থ সংযম, যম মানে ধর্ম। ধনোপার্জনের ক্ষেত্রেও সংযমবুদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত রাখার প্রতীক পেঁচা। যমদূত পেচক তাঁর নিজের বৃত্তি ও প্রভুর দৌত্যের কথা স্মরণ করিয়ে মৃত্যুচিন্তা ও আত্মচিন্তা জাগ্রত করে সাধকের মনে।
পেচক গোপনচারী। অতি গোপনে এরা বাস করে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। সাধকের সাধনাও দৃশ্যমান জগতের বাইরে হওয়া উচিত। ধান যা মানুষের আহার, তার শত্রু ইঁদুরদের সংহার করে সে ধনরক্ষার ব্রত পালন করেছে। যা মানব হিতৈষীর কাজে লাগে।
আরো পড়ুন: হিন্দু ধর্ম মতে সপ্তাহের কোন দিন কোন দেব-দেবীর পুজো করা উচিৎ
এর পাশাপাশি বলা হয় যে, কোজাগরীর রাতে মা লক্ষ্মী খোঁজ নেন কে জাগ্রত রয়েছে। জেগে থাকা ব্যক্তিকেই তিনি ধনের সন্ধান দেন। পেঁচা প্রতি রাতেই জেগে থাকে। দিনে ঘুমায়। একই সঙ্গে ধনের উপার্জন এবং ঐশ্বরিক চিন্তা- দুই গুণই পেঁচকের মধ্যে বিদ্যমান।
লক্ষ্মীর বাহন অর্থে যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। শাস্ত্রে বলা হয় যে, যিনি জাগতিক মায়া মোহ উপেক্ষা করে সাধনার ব্রত নিয়ে নির্জনে সেবাকাজে আত্মোৎসর্গে ব্রতী হবেন তিনি শ্রীময়ীর কৃপাদৃষ্টি লাভ করবেন। পেঁচক দিনে ঘুমায়, রাতে জেগে থাকে। নিদ্রা ও জাগরণ দিয়ে সে পরমার্থকামী সাধক-সাধিকাদের অনুকরণের যোগ্য।
এসি/ আই. কে. জে/