সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শূন্য কোভিড নীতির ফলে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চীনা বাসিন্দারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৮ অপরাহ্ন, ১৩ই জুন ২০২৩

#

ছবি: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

চীনে পালিত তিনটি ভালোবাসা দিবসের একটি পালিত হয় ২০ মে। এদিন ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালিত হওয়ার কারণ হলো তারিখটি চীনা ভাষার "আমি তোমাকে ভালোবাসি" বাক্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। 

অনেক দম্পতিরাই এ তারিখে তাদের বিবাহ নিবন্ধন করতে চায়। ফলশ্রুতিতে এদিন স্থানীয় সরকারকে ভীড় সামলাতে বিশেষ বেগ পেতে হয়।

কিন্তু এ বছর একটু ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়।

তথ্য অনুযায়ী, চীনের গুয়াংডং এবং ফুজিয়ান প্রদেশে এদিন বিবাহ নিবন্ধনের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমেছে এবং হুবেই ও গুইঝোতে এ পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমেছে।

প্রয়াত মাও সেতুং এর শহর হুনানের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এ প্রদেশে মাত্র ৪৫৭৬ জন দম্পতি বিবাহ নিবন্ধন করেন, যা গত বছরের তুলনায় ৭৫ শতাংশ কম।

তবে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। দীর্ঘ তিন বছর ধরে শূন্য কোভিড নীতির কারণে গৃহবন্দী থাকার পর অধিকাংশ মানুষেরই জীবনধারার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। এমনকি অনেকেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়ে এখন সন্তান নিতেও চান না।

কোভিড ১৯ এর তীব্র বিধিনিষেধের পর মানুষ তার পূর্বের জীবনধারায় ফিরে আসলেও এটি তাদের মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চীনের বিভিন্ন নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের মানসিক ক্ষত উপলব্ধি করতে পেরে অবাক হয়ে যান অনেকেই।

যেমন, হেনান প্রদেশের আইফোন ফ্যাক্টরি থেকে শূন্য কোভিড বিধিনিষেধ এর সময় পালিয়ে আসা এক কর্মী জানান তিনি আর তার পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে যেতে চান না। কোভিড ১৯ বিধিনিষেধের সময় ফক্সকন কোম্পানির ব্যাবহারে তীব্রভাবে মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত এই কর্মী বর্তমানে ছোটখাটো কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

অন্য একজন পালিয়ে যাওয়ার পরেও জিনজিয়াং প্রদেশে আটকে পড়েন। তিনি তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন।

সেই ভয়াবহ দু:সহ দিনের কথা মনে করে আজও তার মন কেঁপে উঠে। তিনি এখন স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় গ্রামে ফিরে গেছেন।

আরেক কর্মীর সাথে কথা বলা হয় যিনি কোভিড এর শত বিধিনিষেধ মেনে চলা সত্ত্বেও তার চাকরি থেকে তাকে ছাঁটাই করা হয়।

তিনি এখন একটি কারিগরি শিল্প কারখানায় কাজ করলেও চাকরি হারানোর ভয় এখনও তিনি পান।

আরো পড়ুন: চীন ও আরব দেশগুলোর মধ্যে বড় বিনিয়োগ চুক্তি

অন্য একজন লকডাউনের ভয়ে এতোটাই ভীত যে তিনি সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করে যান, যেন আবার লকডাউন হলে তাকে আর খাদ্যাভাবে না পড়তে হয়।

তিনি আর চীনে থাকতে চান না। তার মতে চীন তার মানসিক ক্ষতির কারণ। তাই তিনি ইউরোপে পিএইচডি করার পরিকল্পনা করছেন।

এম এইচ ডি/ আই. কে. জে/

শূন্য কোভিড নীতি মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত চীনা বাসিন্দা

খবরটি শেয়ার করুন