ছবি: সংগৃহীত
মাঝারি আকারের ঝোপঝাড়যুক্ত সবুজ বৃক্ষ। কেবল বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে না। বছরে একবার ফল দেয়। আবার এর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুষ্প থেকে মধু আহরণে অমৃত সঞ্চার করে।
এই ফলেরও আছে অসাধারণ কিছু ঔষধি গুণ।
এক সময় দেশের সর্বত্র এই ভেষজ গাছটির দেখা মিললেও বর্তমানে এটি বিলুপ্তপ্রায়। ঝড়-বৃষ্টি, রৌদ্র, শৈত্যপ্রবাহ সবকিছুকে হাসিমুখে বরণ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অযত্নে অবহেলায় বিভিন্ন নামে দাঁড়িয়ে আছে হামজাম ফলের গাছ। অথচ এ ফলের অসাধারণ ঔষধি গুণের কথা অনেকেরই অজানা।
কোনরকম পরিচর্যা ছাড়াই ঝোপঝাড়ে বেড়ে ওঠে হামজাম ফলের গাছ। অঞ্চল ভেদে কাকফল, কাকজাম, হামজাম, ছেরাবেরা, কাউয়াঠুটি, আমঝুম, আমজাম, খেজুরজাম, ভূতিজাম, কাজলঘড়ি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
এর বৈজ্ঞানিক নাম Lepisanthes rubiginosa. ইংরেজি নাম Rusty sapindus, পরিবার Sapindaceae. মূলত এটি বনে-জঙ্গলে অযত্ন অবহেলায় বেড়ে ওঠে। এই ফল গাছের আকার মধ্যমা আকৃতির, পাতার গড়ন আমপাতার মতো হলেও অনেক নরম।
এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত পাকা ফল পাওয়া যায়। হিমালয় অঞ্চল ছাড়া এশিয়ার প্রায় দেশেই হামজাম ফলের দেখা মেলে। এর আদি নিবাস কোথায় জানা না গেলেও থাইল্যান্ডের কিছু কিছু এলাকায় এর বাণিজ্যিক চাষ হয়। আমাদের দেশে এক সময় বনে জঙ্গলে এর অহরহ দেখা মেললেও এখন বিলুপ্তপ্রায়।
গাছে এই ফল গুচ্ছবদ্ধ অর্থাৎ থোকা আকারে ধরে।
কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আধাপাকা অবস্থায় গোলাপি-লাল, পাকলে উজ্জ্বল কালো রং ধারণ করে। দেখতে অনেকটা কালো জামের মতো, কিন্তু আকারে ছোট, অনেকটা ক্ষুদি জামের মতো। কাঁচা ও আধাপাকা অবস্থায় ভীষণ কষওয়ালা। পাকলে কষ ভাবটা অনেকটা কেটে যায় ও মিষ্টি হয়। এ গাছের ফুলে আছে মধু। এটা পাখিদের ফল হলেও গ্রামের শিশু কিশোররা এই ফল খেতে পছন্দ করেন।
আরো পড়ুন: জাম খাওয়ার পর যা খাবেন না
থাইল্যান্ড বোটনিক্যাল গার্ডেন অর্গনাইজেশন প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডে হামজাম ফলকে মহুয়াত ফল বলা হয়। থাইল্যান্ডে এ ফল দিয়ে ক্লোন ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, বিকল কিডনি ও জ্বর নিরাময়ে ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
আয়ুর্বেদ মতে হামজামের ফল রুচিকর, মলসঞ্চারক, কিডনি সমস্যায়, জ্বর, জিভ ও মুখের ঘা এবং রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে। তবে গাছটির পাতা, ছাল ও শিকর বিভিন্ন ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এম এইচ ডি/