শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেলেন মা-বাবা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি : সংগৃহীত

হারিয়ে যাওয়ার ১৫ বছর পর মা-বাবা ও পরিবারকে খুঁজে পেয়েছেন মমতাজ বেগম টুক্কুনি। জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানার সার্বিক সহযোগিতায় টুক্কুনি খোঁজ পায় তার পরিবারের। 

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) কাগমারীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ভাসছে আনন্দ অশ্রুর মিলনমেলায়।  

মমতাজ বেগম টুক্কুনির বাড়ি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার কাগমারীপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল হাসেম। মায়ের নাম সইরেফুলি। 

জানা যায়, ১৫ বছর আগে বকশীগঞ্জ উপজেলার কাগমারিপাড়া গ্রামের আবুল হাসেমের মেয়ে টুক্কুনি ওরুফে মমতাজকে কাজের মেয়ে হিসেবে ঢাকায় পাঠানোর জন্য একই গ্রামের শাবুল মিয়া পার্শ্ববর্তী পাখিমারা গ্রামের নেহার বেগমের কাছে দেয়। ঢাকায় নেহার বেগমের মেয়ের বাসায় কাজ করার সময় ৬ বছর বয়সে ১৫ বছর আগে হারিয়ে যায় টুক্কুনি। নিজের বয়স মাত্র ৬ বছর হওয়ায় জামালপুর জেলার নাম ছাড়া বাড়ির ঠিকানাও বলতে পারেনি টুক্কুনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও টুক্কুনিকে পায়নি তার বাবা। 

হারিয়ে যাওয়ার পর টুক্কুনিকে চট্টগ্রাম শহরে পায় অপরিচিত এক মহিলা। পরে তাকে লালন পালন করে লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়ার কাছে বিয়ে দেয়। দাম্পত্য জীবনে টুক্কুনি বর্তমানে ৩ সন্তানের জননী। স্বামীর সংসার করার পাশাপাশি তার মা-বাবাকে খুঁজতে থাকে টুক্কুনি। কোনো উপায় না পেয়ে টুক্কুনির স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মমতাজ বেগম টুক্কুনির ঠিকানা বের করার উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে ওসি সোহেল রানা বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম শাহীন আল আমীনসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তা চান। 

পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি ব্যাপক প্রচার করলে মমতাজ বেগম টুক্কনির ঠিকানা, বাবা-মা ও পরিবারের লোকজনকে খোঁজে পান। এর পরেই টুক্কুনির স্বামীর বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করে ওসি টুক্কুনির পরিবারকে দেন। সেই ঠিকানা অনুযায়ী টুক্কুনির বাবা আবুল হাসেম ও মা সইরেফুলি বকশীগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে টুক্কুনিকে খোঁজে পান। সেটাই টুক্কুনির স্বামীর বাড়ি। সেখান থেকে টুক্কুনিকে তার স্বামীর অনুমতি স্বাপেক্ষে তার বাবা হাসেম ও মা সইরেফুলি টুক্কুনিকে বকশীগঞ্জ উপজেলার কাগমারীপাড়া গ্রামে তার পিতার বাড়িতে নিয়ে আসে। 

১৫ বছর পর টুক্কুনি বাড়ি ফেরার পর পরিবারের লোকজন ও এলাকার লোকজনের মিলনমেলায় পরিণত হয়। মা বাবাকে ফিরে আনন্দে আত্মহারা টুক্কুনি। মেয়েকে ফিরে পেয়ে বাবা-মা মহাখুশি।  

বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম শাহীন আল আমীন বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিকরা মিলে কাজটি সফল করতে পেরেছি। এটা সকালের আনন্দের বিষয়। 

বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা জানান, সৎ ইচ্ছা থাকলে সব কিছু করা সম্ভব। টুক্কুনির বেলায়ও তাই ঘটেছে। তার ঠিকানা খুঁজে পাওয়া এবং বাবা-মায়ের সন্ধান পাওয়া খুব কঠিন ছিল। পুলিশ ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে টুক্কুনি তার পরিবারের ঠিকানা পেয়েছে। এই মিলনমেলায় টুক্কনির পরিবারের পাশাপাশি থানা পুলিশও খুশি। 

এসকে/ 

পরিবার জামালপুর মা-বাবা ওসি

খবরটি শেয়ার করুন