ছবিঃ সংগৃহীত
কবি আসাদ চৌধুরীর মৃত্যু নেই। একজন ক্ষণজন্মা কবি ও আলোকিত আপন মানুষ আসাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয় না। তিনি সবার ভালোবাসার আকাশে দ্যুতিময় নক্ষত্র হয়ে থাকবেন, আলো বিলিয়ে যাবেন অনাদিকাল, পথ দেখিয়ে যাবেন। এ কথাগুলোই ঘুরে ফিরে এসেছে সবার কথায়, অভিব্যক্তিতে।
কবিকে নিয়ে, কবির কবিতা নিয়ে কথামালায়, কবির কবিতা আবৃত্তি, কবিকে নিবেদিত কবিতামালায় কবির প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় এক অনন্য মাত্রা পেয়েছে শনিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কানাডার টরন্টোর রেডহট তন্দুরিতে আলো দিয়ে যাই-এর ‘আলোক সাহিত্য’র তৃতীয় পর্ব। কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও কবিকে স্মরণে এ পর্বের বিষয় ছিল ‘কবিতায় কবি আসাদ চৌধুরী’।
আয়োজনের পুরো সময়জুড়ে ছিল গহীনের ভালোবাসার অকৃত্রিম প্রকাশ, কান্না, গাল বেয়ে পড়া অবারিত অশ্রু, থেকে থেকে কষ্টের দীর্ঘশ্বাস, হৃদয় নিঃসৃত শ্রদ্ধার্ঘ্য… হারানোর বেদনা। আর এর সবকিছুই জনপ্রিয় কবি আসাদ চৌধুরীকে নিয়ে।
টরন্টোর সাহিত্য ও কবিতা সংশ্লিষ্ট আলোকিত সব মুখের উপস্থিতিতে কবি কাজী হেলালের উপস্থাপনায় প্রচারণাহীন অনাড়ম্বর এই একান্ত ঘরোয়া আয়োজনের শুরুতে প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী ও সদ্য প্রয়াত প্রিয় মুখ রেখা হাবিবুল্লাহ’র স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কবির প্রতিকৃতিতে সবার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও প্রদীপ প্রজ্বলন করেন আলোককর্মী ফারহানা আহমেদ ও ফ্লোরা নাসরিন ইভা।
স্বাগত বক্তব্য দেন আলোক অভিভাবক মির্জা রহমান। আয়োজনের বিষয়বস্তুর ওপর লিখিত বক্তব্য দেন সামিনা নাসরিন চৌধুরী ও মম কাজী।
কবির কবিতা, মানবিকতা, আদর্শ, সবাইকে অবলীলায় আপন করে নেওয়াসহ নানা দিক নিয়ে আলোকিত কথামালায় কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানান আলোক অভিভাবক হাসান মাহমুদ, লেখক ও সংগঠক আশরাফ আলী ও সাদি আহমদ, সাহিত্যিক জসিম মল্লিক, সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, কবি মেহরাব রহমান, শিশু সংগঠক রওশন আরা, কবি রেজা অনিরুদ্ধ ও কবি হোসনে আরা জেমী।
কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী দিলারা নাহার বাবু, সুমন মালিক, ফারহানা আহমেদ, নাজমা কাজী, নুসাইবা, ফ্লোরা নাসরিন ইভা প্রমুখ।
কবিকে নিবেদিত স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন তাসমিনা খান, মুনিরা সুলতানা মিলি, আরিয়ান হক, আশরাফ আলী ও ঋতুশ্রী ঘোষ।
কবিকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন কবির কবিতা থেকে আবৃত্তির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান আবৃত্তিশিল্পী মেরী রাশেদীন, দিলারা নাহার বাবু, কামরুন নাহার হিরা ও ফাতেমা খান বিধুর।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে আবেগময় অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন কবি কন্যা নুসরাত জাহান শাওলি। তার কান্নাভেজা কথামালায় উপস্থিত সবাই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। শাওলি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান। কবির প্রতি সবার যে অবারিত অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রকাশ দেখেছেন, তাতে তারা অভিভূত বলে উল্লেখ করেন এবং আলো দিয়ে যাই -এর আয়োজনের সঙ্গে জড়িত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
শেষে অনাড়ম্বর এই আয়োজনে উপস্থিত কবি, সাহিত্যিক, আবৃত্তিশিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, সুধীজন সবার প্রতি আলো দিয়ে যাই-এর পক্ষ থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয় এবং ভবিষ্যতেও সবাই আলো দিয়ে যাই-এর পথচলায় সঙ্গে থাকবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
‘কবিতায় কবি আসাদ চৌধুরী’ শিরোনামের এই আয়োজনে অন্যান্য সুধীজনের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি বাদল ঘোষ, কবি ঋতু মির, কবি রেজা সাত্তার, কবি কাম্রুন্নাহার সুপ্তি, কবি সাইদুল খান, লেখক বিদ্যুৎ সরকার, আলোক সুহৃদ দেওয়ান মোতাহের ও মিথিলা রহমান নীলা, আবৃত্তিশিল্পী শিখা আখতারি আহমেদ, মুনিমা শারমিন, মার্জিয়া মৌ, ইরা নাসরিন, বদরুদ্দোজা সিদ্দিকসহ আরও অনেক আলোকিত মুখ।
একে/
